তোমার নামের সাথে, তোমার মহত্ত্ব দেখিয়ে ভালো কাজে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবর্তন করেছো নোবেল পুরস্কার । সারা বিশ্বে ৬টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে সেরাদের জন্য তোমার এই মহৎ উদ্যোগ । তোমার লক্ষ ছিলো ,” For the greatest benefit to mankind.” কিন্তু যখন দেখি তোমার এই উদ্যোগ যথাযথ হচ্ছে না তখন আমাদের খুব কষ্ট লাগে । মহাত্মা গান্ধী, জুলিও কুরি শান্তি পদকপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাদের নোবেল থেকে বঞ্চিত করে ইসরাইলে মানবতা বিরোধী নেতা সিমন প্যারেজ , রবিন ইসহাক, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে গনহত্যার সহযোগী আমেরিকার হেনরি কিসিঞ্জারসহ বিতর্কিত ডঃ ইউনুস, আং সান সুচিদের তোমার প্রবর্তিত শান্তি পুরস্কার দিয়ে এর হানী ঘটিয়েছে ।
প্রিয় নোবেল, পৃথিবীতে কিছু মানুষ তার নিজ কর্মগুনে সকল পুরস্কারের উর্ধে উঠে যায় । ওই মহৎব্যাক্তিদের পুরস্কৃত করে ব্যাক্তি / প্রতিষ্ঠানের মান বেড়ে যায় ! তেমনি এক মহামানবের কথা আজ তোমাকে বলতে চাই । আমি নিশ্চিত,তুমি জীবিত থাকলে তোমার মহৎ উদ্দেশ্য সফল করার জন্য , এই মহামানবকে নিজ হাতে পুরস্কৃত করে, তোমার প্রতিষ্ঠানকে ধন্য করতে ।
প্রতি বছর তার কাজের জন্য তিনি সারাবিশ্ব থেকে বিভিন্ন পুরস্কার পাছেন, আর তা তিনি উৎসর্গ করছেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য ! - তিনি বাংলাদেশের গণমানুষের প্রানপ্রিয় নেতা শেখ হাসিনা । অতি সম্প্রতি ব্রিটিশ মিডিয়া যাকে “মাদার অফ হিউম্যানেটি “ বলছে, আবার কেউ কেউ তাকে বলছে, “ মাদার অফ পিস ”বলে অখ্যায়িত করছে । শেখ হাসিনা, মাত্র নয় বছরে একটি দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উচ্চ মধ্যবিত্তের কাছাকাছা নিয়ে এসেছে ।দেশ পরিচালনায় কোন যাদু নয়, তার ক্যারেশমেটিক নেতৃত্বের গুনে সারা পৃথিবীর কাছে তিনি এখন রোল মডেল ।
প্রিয় নোবেল, শান্তির জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজের দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে এক নতুন বার্তা পৌচ্ছে দিয়েছে । তার দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে, কম করে হলেও ৭টি সফল কর্মের কারনে তিনি নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করছেন ।
তার মধ্যে - শিক্ষা , নারী উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ,পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয় , শান্তিপুর্নভাবে ছিটমহল বিনিময়, অত্র অঞ্চলে জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং সফলতা, আর সম্প্রতি মানবিক কারনে বার্মিজ নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান ।
যেমন, শিক্ষা: বছরের শুরুতেই প্রায় ৩৩ কোটি বই বিনা পয়সায় ছাত্র ছাত্রীদের হাতে পৌচ্ছে দিচ্ছে ! একটি দরিদ্র দেশে যা বিরল । নারী উন্নয়নঃ নারী উন্নয়নের অগ্রগতির জন্য সরকার আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছে ।
খাদ্য: খাদ্য ঘাতটির অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্ত করে এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে ।
শান্তি চুক্তি: পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল, পার্বত্য অঞ্চলে অনেক দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটিয়ে, আনুষ্ঠানিক অস্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহীদের মুলধারায় ফিরিয়ে এনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা একমাত্র শান্তির জননী, শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব ।
সমুদ্র বিজয়: যেখানে সারা বিশ্বে নিজেদের অধিপত্য বজায় রাখার জন্য যুদ্ধ করতে হয়, সেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা , তার রাজনৈতিক মেধা কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে ভারত এবং বার্মার কাছ থেকে বিশাল সমুদ্র এলাকা অর্জন করে ।
ছিটমহল বিনিময়: একইভাবে ভারতের সাথে বহুদিনের অমীমাংসিত ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যদিয়ে ছিট মহল বাসিন্দাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে মানবতার এক নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা । জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সঃ বাংলাদেশ, ভারতসহ এই অঞ্চল এক সময় জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের সর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছিলো, দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে জঙ্গিরা মহড়া দিতো , এক দিনে একইসাথে সারা দেশের আদালতে বোমা হামলা চালিয়ে সন্ত্রাসীদের শক্তির মহড়া দিয়েছিলো ,প্রকাশ্য জনসভায় গ্রেনেন্ড হামলা করে পুরো রাজনৈতিক দল ধ্বংস করতে চেয়েছিলো ।এক দেশ থেকে আরেক দেশে প্রকাশ্যে অস্র স্মাগ্লিং করতো । জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের মানুষজন জিম্মি হয়ে পড়েছিলো । নিজের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুকি নিয়ে এই অঞ্চলের জনগণের জন্য একটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য অঞ্চল গড়ে তুলেছেন ।
রোহিঙ্গা উদ্ধাস্ত: ১৬ কোটি জনসংখ্যার একটি দেশে হঠাৎ করে লক্ষ লক্ষ উদ্ধাস্ত মানুষের দায়িত্ব নেয়া বিরাট ব্যাপার । শুধু মাত্র মানবিক কারনে সহায় সম্বলহীন এই লোকগুলোকে জননেত্রী শেখ হাসিনা জায়গা না দিলে, বঙ্গপোসাগরে ঝাপ দেয়া ছাড়া রোহিঙ্গাদের আর উপায় ছিলো না । শেখ হাসিনা বলেছিলেন , “১৬ কোটি মানুষের খাবার দিই৷ সেই সঙ্গে কয়েক লাখ মানুষকে খাবার দেওয়ার সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। আমরাও তো রিফিউজি ছিলাম। রিফিউজি থাকার যন্ত্রণা কী, তা আমরা বুঝি। ”
প্রিয় আলফ্রেড নোবেল, এরচেয়ে বড় মানবিক,মহামানব আমি দেখিনি । কত বড় হদয় হলে , কত বড় মানবতাবাদী নেতা হলে , কত বড় মানবিক হলে , কত বড় জননী হলে – এমনটি বলতে পারে, এমনটি করতে পারে । আয়তনে ছোট একটি দেশের জনপ্রিয় রাষ্ট্রনায়ক, সারা বিশ্বের দৃষ্টি কেরেছেন । ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্রের জনক বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে প্রথম যোগদান করে যেমন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিলো তেমনি এবার জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে মাদার অব হিউম্যানেটি শেখ হাসিনা সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করবে ।
সুতরাং আমি মনে করি – ইতিমধ্যে বিতর্কিত ইসরাইলের সিমন প্যারেজ , রবিন ইসহাক, ইউএসএর হেনরি কিসিঞ্জারসহ বিতর্কিত ডঃ ইউনুস এবং আং সান সুচিদের নোবেল শান্তি পুরস্কার দিয়ে, তোমার এই মহৎ কাজের যে হানী ঘটেছে, তার থেকে দায় মুক্তির জন্য এখনি সময় - বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত , মাদার অব পিস , বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার দিয়ে নোবেল প্রতিষ্ঠানের সম্মান অক্ষুন্ন রাখবে ।
লেখক: নব-নির্বাচিত সভাপতি , ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ ।