কাতালোনিয়ার মানুষ স্বাধীনতা চায়। ভোটও দিয়েছে এর পক্ষে। সবই জানালেন কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লোস পুজেমন। কিন্তু এখনই স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না তিনি। স্পেনের সঙ্গে আরো আলোচনা করতে চান তিনি। সময় নিলেন আরো কয়েক সপ্তাহ।
কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সেলোনায় আঞ্চলিক পার্লামেন্টের অধিবেশনে এসব কথা জানান কার্লোস পুজেমন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ভাষণ দেন তিনি।
বিবিসি জানায়, ইউরোপসহ সারাবিশ্বের মনোযোগের বিষয় ছিল পুজেমনের ওই ভাষণ। অধিকাংশের ধারণা ছিল ওই ভাষণের মাধ্যমেই স্বায়ত্ত্বশাসিত ওই অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন তিনি। আলোচনার পথ খোলা রেখেই ভাষণ শেষ করলেন পুজেমন।
গত ১ অক্টোবর কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা প্রশ্নে ওই এলাকায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ওই গণভোটে ৯০ শতাংশ ভোট পড়ে স্বাধীনতার পক্ষে। যদিও মাদ্রিদ অর্থাৎ স্পেনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ওই ভোট অবৈধ এবং দেশটির আদালতও তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
পুজেমনের ভাষণ নিয়ে আগ্রহ যেমন ছিল, তেমনি বেশ নাটকীয় ছিল তাঁর বলার ধরনও। শুরু থেকেই পুজেমনের ভাষণে মনে হচ্ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা তিনি দিয়েই দিবেন। তবে শেষ দিকে এসে তিনি জানান, আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টির মীমাংসা চান তিনি।
ভাষণের এক পর্যায়ে পুজেমন বললেন, ‘ব্যালট স্বাধীনতার পক্ষে বলেছে এবং আমি এরই পক্ষে এগোতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘কাতালোনিয়ার মানুষ স্বাধীন রাষ্ট্র চায়। কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে এসব মানুষের পক্ষেই যেতে চাই আমি।’
এরপরই তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা কয়েক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করছি। কারণ স্পেনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত সংলাপে বসতে চাই আমরা।’
স্পেনের উদ্দেশ্যে কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা উন্মাদ নই, আমরা বিদ্রোহী নই, আমরা সাধারণ নাগরিক, যারা ভোট দিতে চাই।’
পুজেমন বলেন, ‘আমরা ১৮ বার বলেছি স্কটিশ ধরনের গণভোট চাই আমরা যেখানে উভয় পক্ষের মতামত থাকবে। কিন্তু বারবারই তা প্রত্যাখান করা হয়েছে।’
গত ১ অক্টোবরের গণভোটে স্পেন সরকার বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন পুজেমন। তিনি জানান, ভোটকেন্দ্রে যেতে পুলিশ ভোটারদের বাধা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘উদ্দেশ্য ছিল ভীতি তৈরি করা। কিন্তু তা ভেস্তে গেছে। তাঁরা তাঁদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।’
ভাষণের শুরুর দিকে পুজেমন বলেন, ‘এটা স্পষ্ট আমাদের বিষয়টি আর অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। কাতালোনিয়া এখন ইউরোপের একটি বিষয়।’