ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা বানসালির ওপর উগ্রবাদীদের হামলার পর গোটা বলিউড ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অনেকেই ন্যায়বিচার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। কিন্তু যেই ছবির শুটিং করতে গিয়ে গন্ডগোল বাঁধে সেই ‘পদ্মাবতী’-র তিন প্রধান অভিনয় শিল্পী বেশ কিছুক্ষণ নীরব ছিলেন। ধাক্কা কিছুটা সামলে নিয়ে শনিবার বিকেলের দিকে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন তাঁরা।
ছবির নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছি। শুক্রবারের ঘটনায় গভীর ভাবে মর্মাহত।’
ভিন্ন একটি টুইটে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘পদ্মাবতীর চরিত্রে অভিনয় করে আমি সবাইকে এতটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে, এই ছবিতে ইতিহাসের কোনো বিকৃতি ঘটানো হয়নি।’
ছবির খল চরিত্রে অভিনয় করা তারকা রণবীর সিং তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘রাজপুত সম্প্রদায় ও রাজস্থানের মানুষের আবেগ ও স্পর্শকাতরতা মাথায় রেখেই আমরা ‘পদ্মাবতী’ সিনেমা বানাচ্ছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সঞ্জয় লীলা বানসালি স্যার ভারতের অন্যতম চলচ্চিত্র নির্মাতা যিনি শুদ্ধ সিনেমা নির্মাণ করেন। কারও অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মতো কিছু তিনি কোনো দিনই করেননি।’
‘পদ্মাবতী’-র সেটে যেই তাণ্ডব চালানো হয়েছে তা দুঃখজনক বলে মনে করেন রণবীর। তিনি আশা করেন, রাজস্থানের মানুষ একদিন তাঁদের ভুল বুঝতে পারবেন। এই অভিনেতা ভবিষ্যতে রাজস্থানবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন।
আর এই ছবির আরেক অভিনেতা শহীদ কাপুর লিখেছেন, ‘খুব খুব খুব দুঃখজনক। এই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো শব্দ আমার কাছে নেই। সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই ঘটনা আমাকে ভীষণ ভাবে আঘাত করেছে।’
‘সঞ্জয় লীলা বানসালি এমন একজন নির্মাতা যাকে নিয়ে দেশের গর্ব করা উচিত। ‘‘পদ্মাবতী’’ দেখার পরই মানুষ বুঝতে পারবেন বানসালি এই চরিত্রটিকে কী পরিমাণ মর্যাদা দিয়েছেন।’ অন্য এক টুইট বার্তায় লিখেছেন শহীদ।
উল্লেখ্য, চিতোরের রানি পদ্মাবতীকে ভুলভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে বন্ধ হইয়ে গেছে পদ্মাবতী সিনেমার শুটিং। শুধু তাই নয়, শুক্রবার শুটিং চলাকালীন রাজপুত উগ্রবাদীরা ছবির পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালিকে লাঞ্ছিত করেন। বানসালি কথা দিয়েছেন, তিনি আর কোনো দিন রাজস্থানে শুটিং করবেন না।
রাজস্থানের আমের ও জাইগারহ দুর্গে পদ্মাবতী সিনেমার দ্বিতীয় ধাপের শুটিং চলছিল। কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে হামলা করে রাজপুত উগ্রপন্থীদের একটি দল। ‘করনি সেনা’ নামের ওই সংগঠনের কর্মীরা পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালিকে শারীরিকভাবেও হেনস্তা করে। শুটিং স্পটে হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।