আগামী এপ্রিল থেকে উচ্চমূল্যের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ায় বিভিন্ন খাতে ২৩ থেকে ১০৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পেট্রোবাংলা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এভাবে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির অভিঘাত সামলানো অর্থনীতির পক্ষে কঠিন হবে।
তবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, এলএনজি আমদানির ফলে গ্যাসের দাম বাড়লেও জ্বালানি সংকট কাটিয়ে গতি সঞ্চার হবে উৎপাদন খাতে।
বর্তমানে দেশে দৈনিক ৩৬০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ পরিমাণ ৩৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। সংকট কাটাতে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি, এর ৬ মাস পর আমদানি হবে আরো ৫০ কোটি ঘনফুট। বর্তমানে দেশিয় গ্যাসের ইউনিট প্রতি গড় বিক্রয় মূল্য যেখানে ৮ টাকা ৮৬ পয়সা, সেখানে সব ধরনের শুল্কসহ এলএনজির দাম পড়বে ৬২ টাকা ১৫ পয়সা।
উচ্চমূল্যের এই জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ে এলএনজি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণে প্রাথমিক রূপরেখা তৈরি করেছে পেট্রোবাংলা। যেখানে বাণিজ্যিক ও শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে যথাক্রমে ১০৫ ও ৯২ শতাংশ। ২৩ শতাংশ গৃহস্থালিতে। অন্যান্য খাতে বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ৫৬ থেকে ৭৫ শতাংশ।
এলএনজি আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার না হলে প্রস্তাবিত এই দামেও পরিবর্তন হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে পেট্রোবাংলা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘যে ডেভেলপমেন্টে গ্যাস রিকোইরমেন্ট হবে বিশেষ করে অর্থনীতি জোনে সেটার আকার অনেক বড়। এ কারণে এলএনজি আনতে হবে।গ্যাস না থাকার চেয়ে যে দামে আমরা গ্যাস পাচ্ছি সেটা অনেক ভালো। কারণ আমাদের প্রডাকশন তো করতে হবে। জ্বালানি খরচ কিন্তু তার প্রডাক্টের খরচের মাত্র ১০.১১%।’
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্বিগুণ হারে গ্যাসের দাম বাড়ানোর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামসুল আলম বলেন, ‘এত ব্যাপকভাবে মূল্য বৃদ্ধি অতীতের অবস্থাকেও হার মানিয়ে দেবে। আমাদের এই ধরণের মূল্য বৃদ্ধি সহ্য করার প্রস্তুতি নেই। এছাড়া আমাদের সক্ষমতাও নেই।’
এর আগে চলতি বছরের মার্চ ও জুলাইয়ে দুই ধাপে সব শ্রেণীর গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম বেড়েছে গড়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ।