বর্তমানে আমাদের অন্যতম একটা সমস্যা হচ্ছে জঙ্গি তৎপরতা। হটাৎ করে বেশ কিছু দিন ধরে এই জঙ্গি দেশের পরিবেশ কিছুটা ঘোলাটে করে ফেলেছিলো। আমাদের কিছু সচেনতা আর সহযোগীতা এই জঙ্গিবাদ হতে দেশ কে মুক্ত করতে পারবো। সাধারণ মানুষের মত হয়তো আপনার আশেপাশেই লুকিয়ে অবস্থান করছে ভয়ানক কোন জঙ্গি। হয়তো পরিকল্পনা করছে আরো বড় কোন নাশকতার। আপনার আশেপাশে যদি কোন জঙ্গি অবস্থান নিয়ে থাকে তাহলে কিভাবে বুঝতে পারবেন সন্দিগ্ধ ব্যাক্তি জঙ্গি কিনা? তাই কাউকে বাড়ি ভাড়া দেয়ার পূর্বে জেনে নিন জঙ্গিদের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য।
১. বয়স ১৫-৩৫ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চেহারায় ও চোখে নির্লিপ্তভাব দেখা যায়। কমন পোশাক থাকে গেঞ্জি ও জিন্স।
২. সুনির্দিষ্ট পেশা থাকে না। যে পেশা উল্লেখ করে তা সাধারণত সঠিক থাকে না। এজন্য বাসা ভাড়া দেয়ার পূর্বে অবশ্যই পেশা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
৩. ঘন ঘন বাসা পাল্টায় (২-৬ মাস)। এজন্য পূর্বের বাসায় কতদিন ছিল তা অনুসন্ধানপূর্বক নিশ্চিত হতে হবে।
৪. জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও বাস্তবের ছবির মধ্যে মিল নাও থাকতে পারে। অনেকসময় জাল/নকল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে বাসা ভাড়া নেয়। এজন্য বাসা ভাড়া দেয়ার সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি ও যিনি ভাড়া নিচ্ছেন তার ছবি মিলিয়ে দেখতে হবে। সন্দেহ হলে থানার সাহায্য নিতে হবে।
৫. ভাড়াটিয়া মোবাইল ফোন নম্বর দিতে অনিচ্ছুক থাকে। এজন্য ভাড়া দেয়ার সময় বাড়ির মালিক অবশ্যই নিজের ফোন নম্বর থেকে ভাড়াটিয়ার ফোনে ফোন করে মোবাইল নম্বর সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।
৬. বাসায় খাট, আলমারী, সোফা, ডাইনিং টেবিল এ ধরণের বড় আসবাবপত্র থাকার সম্ভাবনা কম। সাধারণত তোষক, জাজিম ও চাদর ব্যবহার করে।
৭. বড় টিভি কিংবা ডেস্কটপ কম্পিউটার থাকে না। ল্যাপটপ, ট্যাব থাকতে পারে।
৮. বাসার একতলা কিংবা উপরের দিকের ফ্লোরে অবস্থান করার প্রবণতা বেশি।
৯. কম ঘনবসতিপূর্ণ স্থানে সাধারণত বিল্ডিং এর টপ ফ্লোরে থাকার চেষ্টা করে যাতে তাদের কার্যক্রম বিল্ডিং এর অন্য বাসিন্দাদের নজরে না পড়ে।বাসা বা ফ্ল্যাটের দরজা জানালা অধিকাংশ সময় বন্ধ বা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে।
১০. সাধারণত মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে না।
১১. প্রতিবেশীদের সাথে মেলামেশা করে না বললেই চলে। কথাবার্তা খুব কম বলে। নিজেদের মধ্যে কথা বললেও নিচু স্বরে বলে। চেহারায় বন্ধুসুলভ মনোভাব বা আলাপচারিতার কোন লক্ষণই দেখা যায় না। পারতপক্ষে জনসমাগম হয় এসব স্থান এড়িয়ে চলে।
১২. বাসার মধ্যে মহিলা বা নারী থাকলে তারা বাইরে আসে কম। আশেপাশের বাসায় মহিলার সাথে তাদের সম্পর্ক রাখার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয় না।
১৩. বাসায় গৃহকর্মী রাখতে দেখা যায় না। বাসার অভ্যন্তরেও ভিজা কাপড় শুকানোর প্রবণতা রয়েছে।
১৪. সন্তানেরা স্কুলে গমন করে না। সাধারণত বাসায় অবস্থান করে। আশেপাশের শিশু কিশোরদের সাথেও খুব একটা মিশে না।
১৫. খেয়াল করলে দেখা যাবে এরা স্থানীয় বা পাড়ার দোকান থেকে প্রয়োজনীয় কোন দ্রব্য কেনাকাটা করে না। কারণ স্থানীয় দোকানদার মোটামুটি এলাকার প্রায় সব বাসিন্দাদের সম্পর্কে ধারণা রাখে। তাই দোকানদারদের এই সুযোগটি দিতে চায় না জঙ্গিরা।
১৬. গোপনে ঐ বাসায় সন্দেহজনক কিশোর, যুবক কিংবা মধ্যবয়সী পুরুষেরা যাতায়াত করে।
১৭. পুরুষদের মধ্যে কাঁধে ঝোলান ব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়।
১৮. বাসা যিনি ভাড়া দিয়েছেন তার পরিবর্তে অন্য কেউ অবস্থান করতে পারে।
১৯. বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মিত নয়।বাসা থেকে বের হবার ক্ষেত্রে সাধারণ অফিস টাইম(যেমন সকাল ৮টা-১০টা) এড়িয়ে চলে। তারা বের হয়
খুব ভোরে অথবা বেলা ১১টার দিকে। বাসায় ফেরার ক্ষেত্রেও অফিস ছুটির টাইম এড়িয়ে একই পদ্ধতি ফলো করে।
২০. কোন দৃশ্যমান কারণ ছাড়া হঠাৎ করেই ধর্মে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং আচরণে বড় ধরণের সন্দেহজনক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। শুধু তাই নয় পরিবারের লোকজন এবং বন্ধু বান্ধবদের অযাচিতভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে বয়ান দিতে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনার সচেতন দৃষ্টি হয়তো এড়াতে পারে বড় কোন নাশকতা, বাঁচিয়ে দিতে পারে শত মানুষের প্রাণ। কাজেই অনুসন্ধানী দৃষ্টি রাখুন আপনার চারপাশে।