গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য ২০০৩ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের সঙ্গে কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক কোম্পানি নাইকোর করা যৌথ উদ্যোগ (জয়েন্ট ভেনচার) চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া পেট্রোবাংলার সঙ্গে নাইকোর গ্যাস সরবরাহ ও কেনাবেচার চুক্তিও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে দুই চুক্তির অধীনে যেসব সম্পত্তি আছে, তা জব্দের পাশাপাশি নাইকো বাংলাদেশের সম্পত্তি ও বক্ল-৯ এর সম্পত্তিও জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এম শামসুল আলমের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
ছাতকে গ্যাস কুপের বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত নাইকোকে কোনো ধরনের পেমেন্ট (মূল্য পরিশোধ) করা যাবে না বলেও রায়ে উল্লেখ করেছেন উচ্চ আদালত।
আদালতে রিট আবেদেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। নাইকো সংক্রান্ত ইন্টারন্যাশনাল আর্বিট্রেশন আদালতে লড়া বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন গনি।
তিনি বলেন, নাইকোর সঙ্গে করা দু’টি চুক্তি চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে ২০১৬ সালে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এম শামসুল আলম একটি রিটআবেদন করেন। ২০০৩ ও ২০০৬ সালে নাইকোর সঙ্গে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার চুক্তি সঠিকভাবে হয়নি। দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে। এছাড়া ২০০৫ সালে ছাতকে যে বিস্ফোরণ ঘটেছে এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশে থাকা নাইকোর সব সম্পত্তি জব্দের জন্যও আবেদন করা হয়।
এরপর আদালত ২০১৬ সালের ৯ মে রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করেছেন।
আইনজীবী মঈন গনি বলেন, নাইকোর সঙ্গে ২০০৩ সালে করা বাপেক্সের চুক্তি ও ২০০৬ সালের পেট্রোবাংলার সঙ্গে কোম্পানিটির গ্যাস সংক্রান্ত চুক্তি অবৈধ ঘোষণাকরেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুই চুক্তির অধীনে যে সব সম্পত্তি আছে, তা জব্দের পাশাপাশি নাইকো বাংলাদেশের সম্পত্তি ও বক্ল-৯ (টারলো) এর যে সম্পত্তি সেটাও জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ছাতক গ্যাস কুপের বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত নাইকোকে কোনো প্রকার পেমেন্ট করা যাবে না-রায়ে এমনটাও বলে দিয়েছেন আদালত।