তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার ভূমি আত্মসাৎ ও জালিয়াতির মামলার পলাতক আসামি শিল্পপতি রাগীব আলীকে গ্রেপ্তারের পর ফেরত দিয়েছে ভারত।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে সিলেটের বিয়ানিবাজার উপজেলার সুতারকান্দি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তাকে হস্তান্তর করা হয় বলে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানান ।
বিজিবি ও পুলিশের কাছে ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ ও বিএসএফ তাকে হস্তান্তর করে বলে জানান তিনি।
আদালতে হাজির করার জন্য পুলিশ তাকে নিয়ে সিলেটের পথে যাত্রা করেছে বলে জানিয়েছেন সুজ্ঞান চাকমা।
এরআগে সকালে বাংলাদেশে ফেরার পথে ভারতের করিমগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতি ও প্রতারণা অভিযোগে দুটি মামলায় গত ১০ অগাস্ট রাগীব আলী ও তার একমাত্র ছেলে আবদুল হাইসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সিলেটের আদালত। ওই দিনই সপরিবারে ভারতে পালিয়ে যান তিনি।
গত ১২ নভেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাইকে গ্রেপ্তার করে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ।
সিলেটে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত সুপার সারোয়ার জাহান গত ১০ জুলাই এ দুটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
এর মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক (চিঠি) জালিয়াতির মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলেকে আসামি করা হয়। আর প্রতারণা মামলায় রাগীব আলী, তারাপুর চা-বাগানের সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের রাজনগরের বাসিন্দা দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, রাগীব আলীর ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির ও মেয়ে রুজিনা কাদিরকে আসামি করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা তারাপুর চা-বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। ১৯৯০ সালে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে বাগানটির দখল নেন রাগীব আলী।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের একটি বেঞ্চ গত ১৯ জানুয়ারি তারাপুর চা-বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। সিলেটের জেলা প্রশাসনকে ওই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
এরপর ১৫ মে চা-বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়াও ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।