রাজধানী ঢাকার ভেতরে মেট্রোরেল চালুর লক্ষ্যে 'ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট' এর আওতায় রোলিং স্টক (রেল কোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্টের জন্য ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি ও কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
আজ রবিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত 'ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন ৬ কন্ট্র্যাক্ট প্যাকেজ ৮' শীর্ষক এ চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক প্রধান, জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ তাকাতোশি নিশিকাতা, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন তালুকদার, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিক প্রমুখ।
মেট্রোরেলের রুট ধরা হয়েছে, উত্তরা তৃতীয় পর্ব-পল্লবী-রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁও-শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর-তোপখানা রোড-বাংলাদেশ ব্যাংক। মেট্রোরেলের স্টেশন সংখ্যা থাকবে ১৬টি। এগুলো হলো উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল।
মেট্রোরেল চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল আসতে সময় লাগবে ৩৮ মিনিট। প্রতিঘণ্টায় উভয় দিক থেকে যাত্রী পরিবহন করা যাবে ৬০ হাজার। দুটি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হবে ৫ মিনিট।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, রেল কোচ ও ডিপো ইকুইপমেন্ট কেনার লক্ষ্যে ৪২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৬ টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রবিবার জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানির চুক্তি সই হয়।
চুক্তির আওতায় রেল কোচ ও ট্রেন সিমুলেটর ক্রয়, রেল কোচ পরিচালনা ও সংরক্ষণের জন্য ডিপোর যন্ত্রপাতি ও খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং রেল কোচ প্রকৌশলী, পরিচালনা ও সংরক্ষণের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ সেট ট্রেন সরবরাহ করবে। আর ২০২১ সালের মধ্যে আরও ১৯ সেট ট্রেন এবং ডিপো ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করবে। মেট্রোরেলের জন্য যে কোচগুলো আনা হবে, তা হবে আধুনিক ও উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি এবং শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। কোচের আসনগুলো লম্বালম্বিভাবে সাজানো থাকবে এবং প্রতি ট্রেনে ২টি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া থাকবে স্মার্টকাড টিকিটিং পদ্ধতি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেট্রোরেল চালুর লক্ষ্যে হাতে নেওয়া ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এ অর্থের ২৫ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি ৭৫ শতাংশ দেবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকা)।
