রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলায় জামায়াত শিবির জড়িত : পুলিশ
প্রকাশ: ০৪:১৫ pm ১১-১১-২০১৭ হালনাগাদ: ০৪:১৮ pm ১১-১১-২০১৭
 
 
 


রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ঘটনায় জামায়াত শিবির জড়িত বলে দাবি করেছে পুলিশ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি পুলিশের।

রংপুরে হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ: তদন্তে কমিটি রংপুরের এসপি মিজানুর রহমান শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেন, “সামনে নির্বাচন। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য জামাত-শিবির এ ঘটনা ঘটিয়েছে।” নিজের বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, “পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত এবং পরবর্তী পর্যায়ে গ্রেপ্তারদের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী।”  

শুক্রবার ‘ধর্ম অবমাননার’ অভিযোগ তুলে রংপুরে হিন্দু বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এই হামলায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা ছিলেন বলেও দাবি করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‌‌‌‌‌শুক্রবার হামলার আগে পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছিল। তারা দেখেছে কারা হামলা চালিয়েছে।

হামলায় সদর উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক এনামুল হক মাজেদি, স্থানীয় বিএনপি নেতা মাসুদ রানা এবং শলেয়াশাহ জামে মসজিদের ইমাম সিরাজুল ইসলামকে নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে।” রাতে তাদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি বলে ওসি জানান।

শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। 

স্থানীয় লালচাঁদপুর গ্রামের মুদি দোকানি আলমগীর হোসেন এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২৯ অক্টোবর থানায় মামলা করেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত মঙ্গলবার ওই যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। তারপর তিন দিন বাদে আবার বিক্ষোভের পর হয় হামলা। 

ওই এলাকার পাগলাপীর জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মাস্টার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মঙ্গলবার দুপুরে পাগলাপীর এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েকশ মানুষ ছিলেন। বিক্ষোভের পর ওই হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

পরে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে ওই হিন্দু যুবককে গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এরপরেও তিনি গ্রেপ্তার না হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে আবার বিক্ষোভ মিছিল হয়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রংপুর সদরের খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ ও বালাবাড়ি গ্রাম এবং পাশের মমিনপুর গ্রামের ৮ থেকে ১০ হাজার লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বাধা দিলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও লাঠি ছুড়তে থাকে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছররা গুলি ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের মধ্যেই হামলাকারীদের একদল গিয়ে ঠাকুরপাড়া গ্রামে কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে টিটু রায়ের তিনটি, সুধীর রায়ের ছয়টি, অমূল্য রায়, বিধান রায় ও কৌশল্য রায়ের দুটি করে ৬টি, কুলীন রায়, ক্ষিরোধ রায় ও দীনেশ রায়ের একটি করে তিনটি ঘর ভস্মীভূত হয়।

পুলিশের গুলিতে হাবিবুর রহমান (৩০) নামে একজন নিহত হন। এছাড়া হামলাকারীদের ছোড়া ইট ও লাঠির আঘাতে সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় কোতোয়ালি ও গঙ্গাচড়া থানা পুলিশ শনিবার দুইটি মামলা করেছে। এর আগে রাতে জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ পর্যন্ত ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT