রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার প্রশ্নে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে পাস হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চলমান সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত নিয়োগেরও আহ্বান জানানো হয় অনুমোদিত প্রস্তাবে।
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) এর পক্ষ থেকে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। চীন-রাশিয়াসহ ১০ দেশের বিরোধিতা উপেক্ষা করে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার প্রশ্নে উত্থাপিত প্রস্তাবটি জাতিসংঘে পাস হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
ত্রাণকর্মীদেরকে মিয়ানমারে কাজ করার সুযোগ দেওয়া, সকল শরণার্থীর ফেরা নিশ্চিত করা এবং রোহিঙ্গাদেরকে পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার প্রদানের মতো বিষয়গুলোকে ওআইসির প্রস্তাবটিতে অন্তর্ভূক্ত হয়। এছাড়া মিয়ানমারে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয় ওই প্রস্তাবে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নতুন নিয়োগের জন্য তহবিল প্রদানের ব্যাপারে বাজেট কমিটির কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই সাধারণ পরিষদ প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে। পরিষদের ১২২ টি সদস্য দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিরোধিতা করেছে ১০ টি দেশ। আর ২৪টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
এদিকে মিয়ানমারের পাশাপাশি প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছে চীন, রাশিয়া, কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনাম, বেলারুশ, সিরিয়া ও জিম্বাবুয়ে। সম্প্রতি মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লিকে তাঁর মেয়াদকালে সেখানে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দেশটি।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিপীড়নসহ মিয়ানমারজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো তদন্ত করতে জানুয়ারিতে দেশটি সফর করার কথা ছিল তার। তাঁকে কোনো সহযোগিতাও করবে না বলে জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার। সূত্র: গার্ডিয়ান