ট্রেন্ট বোল্ট সফল, আবার ব্যর্থও। জশ হ্যাজলউডের প্রথম বলটি বোল্টের ব্যাটের কানা ছোঁয়ার হুমকি দিয়েও পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। হ্যাটট্রিক আর পাওয়া হলো না অস্ট্রেলিয়ান পেসারের। কিন্তু পরের বলেই প্রায় একই রকম বলে উইকেটকিপারের কাছে বল জমা দিয়ে মাঠ ছাড়লেন বোল্ট। ২৯১ রানে অল আউট হলো নিউজিল্যান্ড।
একটু আগেও সম্ভাব্য স্কোর সাড়ে তিন শ মনে করাচ্ছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের করা ভুলটা নিউজিল্যান্ডও করল। দুর্দান্ত শুরুকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলো তারা। শেষ দশ ওভারে রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছে অ্যান্ডারসন, নিশামের মতো বিগ হিটারদের দল নিউজিল্যান্ড। শেষ নয় ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৬৬ রান তুলতে পেরেছে তারা। বৃষ্টির কারণে ৪৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচেও এক ওভার আগে অল আউট হয়েছে। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই এখন জয়ের স্বপ্ন দেখছে। ৪ ওভার কমে আসলেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উইকেটগুলোতে ২৯২ রানের লক্ষ্য যে বেশ সহজ মনে হচ্ছে এখন! তবে বৃষ্টি অস্ট্রেলিয়াকে সে সুযোগ দেয় কিনা সেটাও দেখার বিষয়। নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শেষ হতেই যে আবার নেমেছে বৃষ্টি।
টুর্নামেন্টের দল ঘোষণার পর থেকেই চার পেসার তত্ত্ব আলোচনায় নিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চার পেসার নিয়েই নামল তারা। তবে যে চারজনকে নিয়ে সবাই বিভোর ছিলেন সে চারজনকে আজ একসঙ্গে পাওয়া গেল না। জেমস প্যাটিনসনের পরিবর্তে জন হ্যাস্টিংস নামলেন। নিউজিল্যান্ডের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে সে সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করেছেন তিনি। তবে শুরুতে এ তত্ত্বকে ব্যর্থ করে দিচ্ছিল নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও লুক রনকির উড়ন্ত শুরুর থামল হ্যাজলউডের সামনে। গাপটিলের আউটের পর খানিক বৃষ্টি। এরপরও চলল রনকির ঝড়। প্রায় আড়াই বছর পর ওয়ানডেতে ফিফটি পেলেন রনকি।
হ্যাস্টিংসের বলে রনকি (৪৩ বলে ৬৫ রান) ফিরলেও ক্ষতি হয়নি নিউজিল্যান্ডের। কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলর দ্রুতগতিতেই রান তুলেছেন। ৩৩তম ওভারেই দুই শ রান করে ফেলেছিল নিউজিল্যান্ড। দলীয় ২১৬ রানে টেলর (৪৬) ফেরার পরও দুশ্চিন্তা ছিলা কিউইদের। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা উইলিয়ামসন আছেন। জিমি নিশাম, কোরি অ্যান্ডারসনের মতো ব্যাটসম্যানেরা নামার অপেক্ষায়! ৩৬ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ২২৫ রান নিউজিল্যান্ডের। শেষের ঝড়ে তিন শ তো বটেই সাড়ে তিন শও অসম্ভব নয়।
কিন্তু সত্যিকারের পেস বোলার থাকলে কী করা সম্ভব সেটাই দেখিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া। দুই প্রান্ত থেকে কখনো মিচেল স্টার্ক, কখনো বা প্যাট কামিন্স চেপে ধরলেন ১৪৫ কিলোমিটার গতি নিয়ে। আর হ্যাস্টিংস ও হ্যাজলউড দেখালেন নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের প্রভাব। ৯৬ বলে সেঞ্চুরি করে পরের বলেই রান আউট হয়ে কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসনও ভূমিকা রাখলেন কিছুটা। ৩৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৫ ওভারেই অলআউট হয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। ৫২ রানে ৬ উইকেট নিয়ে প্রায় একাই নিউজিল্যান্ডকে ধসিয়ে দিলেন হ্যাজলউড।