ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১৯ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
টস জিতলে ব্যাটিং আর ব্যাটিংয়ে নেমে ঝোড়ো শুরু—এই সূত্র মেনেই যেন আজ ফ্লোরিডার লডারহিলে সিরিজনির্ধারণী টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলতে নামে বাংলাদেশ। লিটন দাস দুর্দান্ত খেললে বাংলাদেশ যে উড়ন্ত শুরু পায়, সেটি গত মার্চে নিদাহাস ট্রফিতে দেখা গেছে। আজ লডারহিলে আরেকবার দেখা গেল। লিটন-তামিমের উদ্বোধনী জুটি যে অসাধারণ শুরু এনে দিয়েছে, সেটি কাজে লাগিয়ে উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫ উইকেটে ১৮৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর।
দুর্দান্ত শুরুতে পাওয়ার প্লে দারুণ কাজে লাগানো বাংলাদেশের সামনে ২০০ তোলা কঠিন কিছু ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি। প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৯৭ করা বাংলাদেশ পরের ১০ ওভারে করেছে ২ উইকেটে ৮৭। ১৬.৩ ওভারে ১৫ মিনিটের বৃষ্টি–বিরতির পর রানের গতি কিছুটা শ্লথ হলেও শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহর ২০ বলে ৩২ রানের ছোট্ট ঝড়টা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর গড়তে সহায়তা করেছে। এর আগে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ছিল ১ উইকেটে ১৭৯।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুর্দান্ত সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: এএফপিঅপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ শুরুই করে বাউন্ডারি দিয়ে। স্যামুয়েল বদ্রিকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি মেরে লিটন জানিয়ে দেন, আজ নিজেকে একটু অন্যভাবে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে অ্যাশলি নার্সের শেষ তিন বলে ৬, ৬, ৪ মেরে রানরেট এক ঝটকায় ১২-র ওপরে নিয়ে গেলেন। উদ্বোধনী জুটির তরুণ সঙ্গীকে সাহস দিতে থাকা তামিম ইকবালও শুরু করলেন আক্রমণ। তৃতীয় ওভারে তামিম-লিটন দুজনই ঝাঁপিয়ে পড়লেন আন্দ্রে রাসেলের ওপর। ওই ওভারে উঠল ১৯। ২২ বলে ৫০ পেরিয়ে গেল বাংলাদেশ, যেটি তাদের সবচেয়ে দ্রুত।
শুরুতেই বাংলাদেশের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করলেন কার্লোস ব্রাফেট। শুধু মুখে নয়, কাজেও সতীর্থদের জেগে ওঠার বার্তা দিলেন উইন্ডিজ অধিনায়ক। শর্ট ফাইন লেগে উইলিয়ামসের ক্যাচ বানিয়ে ১৩ বলে ২১ রান করা তামিমকে ফেরালেন ব্রাফেট। ভাঙল বাংলাদেশের ২৮ বলে ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি। নিজেকে হারিয়ে খোঁজা সৌম্য সরকার বাউন্ডারি দিয়ে শুরু করলেও টিকলেন মাত্র ৪ বল। কিমো পলের শিকার হয়ে আউট ৫ রান করে। তামিম-সৌম্যকে হারালেও পাওয়ার প্লে দারুণ কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ। তুলেছে ২ উইকেটে ৭১। এর মধ্যে ৪৫ রানই লিটনের (১৭ বলে)। বাংলাদেশ দলের তরুণ ওপেনার ফিফটি ছুঁয়েছেন ২৪ বলে, সাদা বলে যেটি তাঁর প্রথম ৫০ পেরোনো। লিটন ফিরলেন কেসরিক উইলিয়ামসকে তুলে মারতে গিয়ে তার আগে করে গেলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ ৬১ রান করে।
লিটন-তামিমের পর আরেকটি বড় জুটি হয়নি বাংলাদেশের। লিটন-মুশফিকের তৃতীয় উইকেটে ৩১ রানের পর মাহমুদউল্লাহ-সাকিব আল হাসানের পঞ্চম উইকেটে ৩১ বলে ৪৪ রানের জুটি আরও বড় না হওয়ার আক্ষেপ জাগিয়েছে। অসাধারণ শুরুর পর বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জিং স্কোর পাবে কি না, একটা সময় সে সংশয়ও জেগেছে। তবে মাহমুদউল্লাহ-আরিফুল হকের অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করা ২৫ বলে ৩৮ রান বাংলাদেশ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর গড়তে সহায়তা করেছে। গত ম্যাচে বাংলাদেশ ১৭১ করেও শেষ পর্যন্ত ১২ রানে জিতেছে।