আবারও প্রমাণিত হলো, ফুটবল কোনো একক খেলা নয়। ফুটবল দলগত খেলা। যত বড় তারকাই হন না কেন জিততে হলে দলগত পারফরম্যান্সই বড় কথা।
না হলে এক রোনালদো কিংবা এক মেসির পক্ষে সবসময় টেনে নেওয়া সম্ভব না! পর্তুগালকে রাশিয়া বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে উঠাতে সবথেকে বড় অবদান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। প্রথম ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের পর দ্বিতীয় ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে একমাত্র গোলটিও করেন সিআর সেভেন। তৃতীয় ম্যাচে গোল করার সুযোগ মিস করেন স্পটকিকে। নয়তো তিন ম্যাচে পাঁচ গোলের মালিক হতেন রোনালদো।
একক কারিশমায় পর্তুগালকে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠালেও নক আউট পর্বে দলের হয়ে কিছুই করতে পারলেন না পাঁচবারের ব্যালন ডি অর জয়ী তারকা। শনিবার রাতে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়েছে উরুগুয়ে। তাতেই লুইস সুয়ারেজ, কাভানিদের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। আর পর্তুগাল আটকে গেল শেষ ষোলোতেই।
দলের ব্যর্থতার দিনে বাজে দিন কাটিয়েছেন রোনালদোও। উরুগুয়ের রক্ষণ তো ভাঙতেই পারেননি উল্টো ম্যাচে তার একটি শটও ছিল না অন টার্গেটে! সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন ঠিকই কিন্তু সেগুলো ভেস্তে যায় সহজেই। নিজে পাওয়ার ফুটবল খেললেও সতীর্থদের থেকে সহায়তা পাননি রিয়াল মাদ্রিদের এ ফরোয়ার্ড।
উল্টো উরুগুয়ে সেই পাওয়ার ফুটবলেই পেয়েছে দুই গোল। প্রথমটা কাভানি-সুয়ারেজ জুটির অসাধারণ আক্রমণ। ম্যাচের ৭ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে বাম প্রান্তে বিশাল লম্বা পাস দেন কাভানি। সুয়ারেজ বল নিয়ে ভেতরে ঢুকতে গিয়ে ক্রস করেন। ততক্ষণে আনমার্ক হয়ে পর্তুগাল দূর্গে কাভানি। হেড দিয়ে গোল করে উরুগুয়েকে এগিয়ে নেন কাভানি। দ্বিতীয় গোলটিও প্রায় একই রকম। গোলরক্ষকের থেকে বল পেয়ে মাঝ মাঠের খেলোয়াড় বেনটানকউর পাস দেন কাভানিকে। ডানপ্রান্তে আবারও আনমার্ক কাভানি। ডান পায়ে কোনাকুনি শট নিয়ে বল পর্তুগালের জালে পাঠান পিএসজির এ ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যায় পর্তুগাল। দ্বিতীয়ার্ধে ফেরে ৫৫ মিনিটে ইউরোর চ্যাম্পিয়নরা সমতায় ফেরে পেপের হেডে। কিন্তু সেই গোলেই শেষ তাদের বিশ্বকাপ যাত্রা। উরুগুয়ে দারুণ দিন কাটিয়েছে। অসাধারণ আক্রমণ আর জমাট ডিফেন্স। দুইয়ে মিলিয়ে শেষ আটে যাওয়ার যোগ্য দাবিদার তারাই। এ জয়ে চারে চার হলো উরুগুয়ের। প্রথম পর্বে কোনো ম্যাচ না হেরে চাঙ্গা ছিল সুয়ারেজ-কাভানিরা। নক আউট পর্বের প্রথম ম্যাচেই পেল জয়ের স্বাদ। প্রথম বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নদের এবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা।