তীব্র শীতে শহরেও আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা
কুষ্টিয়া : গত কয়েক দিন ধরে কুষ্টিয়ায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর তাপমাত্রা আরো কমে যাচ্ছে সাথে যোগ হচ্ছে ঠান্ডা বাতাস। মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে জবুথবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তিনদিন ধরে সকালে ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে আকাশ। দুপুর পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্য। ফলে শীতের তীব্রতার কারণে জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও বয়োবৃদ্ধ মানুষের ভীড় বাড়ছে বলে জানা গেছে। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে এদিকে কাজ না পেয়ে বিপদে আছেন নিম্নআয়ের মানুষ। শুক্রবার সারাদিনেও রোদের দেখা মেলেনি। শনিবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চল ছিল কুয়াশার চাদরে ঢাকা। ক্ষেত-খামারে এমনকি রাস্তায় তেমন লোকজন ছিল না। গ্রামের বিভিন্ন স্থানে মানুষ খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বেশ কিছু শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গেল সপ্তাহখানেক ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।তেমন কোনো কাজ পাচ্ছেন না তারা।আবার কাজ পেলেও যেতে পারছে না। ঘন কুয়াশার কারণে মাঠেও তেমন কাজ নেই বলে জানান তারা। রাত ৭টার দিকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শহরের মজমপুরে দৈনিক আন্দোলনের বাজারের পাশে আগুন পোহাচ্ছিলো কয়েক ব্যক্তি। তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেলো, ১৭ দিন আগে মান্নান মিস্ত্রির নেতৃত্বে যশোর জেলা থেকে ১৩জন শ্রমিক কুষ্টিয়ায় এসেছেন একটি ভবনের নির্মাণকাজে। দিনের কাজ শেষে তীব্র শীতে ঊষ্ণতা পেতেই আগুন জ্বালিয়ে একটু শীত নিবারণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এদিকে জেলার এনএস রোডসহ বিভিন্ন স্থানের হাট-বাজারে ফুটপাতের শীতবস্ত্র দোকানীরা গরম কাপড়ের দোকান সাজিয়ে বসেছেন। এছাড়াও মার্কেটের বিপণী বিতান তো রয়েছেই। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানগুলোতে চলছে বেচাকেনা। ক্রেতাদের মধ্যে সিংহভাগই রয়েছে মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা। এদিকে, শীতের তীব্রতা বাড়ায় বোরো বীজতলা ও রবিশস্য ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে বোরোতে কোল্ড ইনজুরি দেখা দেওয়ায় বোরো ধানের বীঝ সবুজ থেকে হলুদাভ হয়ে যাচ্ছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুলিয়া সুকায়না জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলায় সরকারিভাবে আড়াই হাজার ক¤॥^ল বরাদ্ধ পেয়েছি। তাঁর মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভায় বিতরণের জন্য কম্বল দেয়া হয়েছে। তাছাড়া হতদরিদ্রদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে আমরাও নিজেরাই কম্বল বিতরণ করেছি।
এস এম জামাল, কুষ্টিয়া থেকে।