এসএম জামাল, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া -ঈশ্বরদী মহাসড়কের মজমপুর থেকে সাত মাইল পর্যন্ত খানাখন্দে পড়ে ১৫টি গাড়ী বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ সড়কের রানাখড়িয়া জ্যােতি তেল পাম্প থেকে ৯মাইল কাচারী পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে বাস-টাকসহ কয়েক'শ যানবাহন আটকা পড়ে থাকতে দেখা।এরমধ্যে ২টি বাস, ৮ টি ট্রাক ও দুইটি মাইক্রোবাস।
এটা রোববার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ টার চিত্র। ওই সময় সীমাহীম দূর্ভোগে পড়েছিল দূরপাল্লার যাত্রীরা। বিআরটিসি খুলনা সাতক্ষিরা-রংপুরের একজন যাত্রী রংপুর মিঠাপুকুর গ্রামের আয়ুব আলী জানান, কুষ্টিয়াতে এসে জ্যামে পড়ে দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করছি। যদি এখন থেকে কয়েক কিলোমিটার আমার গন্তব্য হতো তাহলে বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে চলে যেতাম, কথাটি বলতে বলতে আর কত সময় অপেক্ষা করতে হবে তাকে এই প্রশ্নই ছুড়ে দেন। তার মত আরো অনেক দূরপাল্লার যাত্রীরা জ্যামে আটকে পড়ার ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করলেও কখন জ্যাম ছাড়বে তার কোন লক্ষন নেই।এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মেরামত ও সংস্কার না হওয়ায় কুষ্টিয়ার এই মহাসড়ক এখন চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কখনও কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে লোক দেখানো সংস্কার কাজ হলেও বাস্তবচিত্রে গর্ত ও খানাখন্দ স্থায়ী রূপ নিয়েছে এই মহাসড়কে।কুষ্টিয়া মজমপুর গেটস্থ জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে কুষ্টিয়া ভেড়ামারা-ঈশ্বরদী সড়কে কোন প্রকার যানজট না থাকলেও ১২মাইল ১৫ মিনিটের পথ যেতে লাগে দু’এক ঘণ্টা। ভাঙা সড়কে প্রাণ হাতে নিয়ে পথ চলছেন এখানকার বাসিন্দা ও যাত্রীরা। জেলাজুড়ে বিস্তৃত প্রায় ২৬০ কি:মি: সড়ক-মহাসড়কের ৯০% অংশই অভিন্নচিত্র।এ সড়কের বিভিন্ন জায়গায় নামে মাত্র গর্ত ভরাট করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তাতে দুর্ভোগ বেড়েছে বলে মনে করছেন যাত্রী সাধারণ। ফলে উত্তরবঙ্গের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের একমাত্র এই মহাসড়কটি এখন সীমাহীন দুর্ভোগের ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ কবলিত সকল প্রকার যানবাহন মালিক-শ্রমিক ও যাত্রীরা চরম ক্ষুব্ধ।
আজ রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে রাস্তার অধিকাংশ স্থানে পাথর উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাথর সড়কের পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। পুরু রাস্তায় ধুলোবালিতে ভরদুপুরেও কুয়াশার রুপ নিয়েছে।এতে যান চলাচলে সমস্যার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ও যানবাহন বিকলসহ যানজট এখন নিত্যসঙ্গী।কুষ্টিয়া শহর থেকে ১২ মাইল পর্যন্ত এবং বারখাদা ত্রিমোহনী পর্যন্ত সব থেকে বেশি খারাপ। এই স্থান দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই সব ধরনের যান চলাচল করছে। প্রতিনিয়ত গাড়ী বিকল হওয়াসহ দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণ যাচ্ছে । আর এ সড়কে দূর্ঘটনার কবলে পরে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকেই। এতে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের যেন কোন মাথাব্যথা নেই! কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর অতি বৃষ্টিতে এই মহাসড়ক দুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই অনুযায়ী সরকারি বরাদ্দ আসেনি। তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি সড়কটি ঠিক রাখার জন্য। এরই মধ্যে এই সড়ক সংস্কারের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আগামী মার্চ মাস নাগাদ কাজ শুরু হবে।’