কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিসর্গবিদ দ্বিজেন শর্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় দ্বিজেন শর্মার মরদেহ। সেখানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার মরদেহ স্কয়ার হাসপাতালের হিমঘর থেকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানসহ অন্যান্যরা তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সর্বশেষ মতিঝিলে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল নটর ডেম কলেজ প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে তার মরদেহ। সেখানে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে রাজধানীর সবুজবাগের রাজারবাগ বরদেশ্বরী কালী মন্দিরসংলগ্ন শশ্মানে তার দাহ সম্পন্ন হবে। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ২৩ আগস্ট দ্বিজেন শর্মাকে বারডেমের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার রাতে সেখান থেকে তাকে স্কয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রকৃতির প্রতি প্রেম, গবেষণা ও লেখালেখির জন্য দ্বিজেন শর্মাকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, য় একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। দ্বিজেন শর্মা ১৯২৯ সালের ২৯ মে সিলেট বিভাগের বড়লেখা থানার শিমুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা সিটি কলেজ থেকে স্নাতক অর্জনের পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। তিনি উদ্ভিদবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেছেন করিমগঞ্জ কলেজ, বিএম কলেজ ও নটর ডেম কলেজে। পরে মস্কোর প্রগতি প্রকাশনে চাকরি করেছেন প্রায় ২০ বছর। এরপর দেশে ফিরে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিতে। পরোক্ষভাবে বামপন্থি রাজনীতি করার কারণে কিছুকাল আত্মগোপন, এমনকি কারাবাসও করতে হয়েছে দ্বিজেন শর্মাকে। ১৯৭০ এর জলোচ্ছ্বাসে দুর্গত মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের অধিকাংশ সময়ই তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। ১৯৬০ সালে দেবী চক্রবর্তীর সঙ্গে দ্বিজেন শর্মার বিয়ে হয়। তাদের এক ছেলে সুমিত্র শর্মা আর এক মেয়ে শ্রেয়সী শর্মা। দ্বিজেন শর্মা রাজধানীর অসংখ্য জায়গায় গাছ লাগিয়েছেন নিজ হাতে।