চলমান বিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে ড্যারেন স্যামির রাজশাহী কিংস ৩ উইকেটে হারিয়েছে তামিম ইকবালের চিটাগং কিংসকে। ফলে, ক্রিস গেইল, ডোয়াইন স্মিথ, তাসকিন আহমেদদের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে উঠলো রাজশাহী।
রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা চিটাগং ভাইকিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৪২ রান। জবাবে, ৯ বল হাতে রেখে ৭ উইকেট হারানো রাজশাহী জয় তুলে নেয়।
এর গ্রুপ পর্বে দু’দলের দু’বারের দেখায় একটি করে জয় পায় চিটাগং ও রাজশাহী। আজকের ম্যাচে ভাইকিংস দলপতি তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ রান। ক্রিস গেইলও ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন। রাজশাহীর হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন উইলিয়ামস। রাজশাহীর দলপতি ড্যারেন স্যামির ব্যাটে জয় তুলে নেয় রাজশাহী।
চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। এ ম্যাচে যে দল জিতবে তারা দ্বিতীয় কোলিয়াফায়ার খেলবে।
দলের হয়ে ব্যাটিং শুরু করতে নামেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও ডোয়াইন স্মিথ। প্রথম ওভার থেকে ২ রান সংগ্রহ করে ভাইকিংস। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইলিয়ামসের বলে স্যামির হাতে ধরা পড়েন স্মিথ। দলীয় ৮ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় চিটাগং।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটে ঝড় তুলেন ক্রিস গেইল। ইনিংসের ১১তম ওভারে ফ্রাঙ্কলিনের বলে বিদায় নেন তিনি। ক্যারিবীয় এই ব্যাটিং দানব আউট হওয়ার আগে করেন ৪৪ রান। উইকেটে থেকে ক্রিস গেইল ৩০ বল মোকাবেলা করেন। ফরহাদ রেজার হাতে ধরা পড়ার আগে দুটি চারের সঙ্গে গেইলের ব্যাট থেকে আসে ৫টি বিশাল ছক্কা। দলীয় ৮২ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় চিটাগং।
গেইল-স্মিথ ফিরে গেলেও উইকেটে থেকে দুর্দান্ত ব্যাট চালান বিপিএলের আসরে এক হাজার রান পূর্ণ করা তামিম ইকবাল। ভাইকিংসের এই দলপতি ৪৪ বলে ৬টি বাউন্ডারিতে ৫০ রান পূর্ণ করেন। তার আগে অবশ্য শোয়েব মালিক বিদায় নেন। ইনিংসের ১৫তম ওভারের শেষ বলে ফরহাদ রেজা ফেরান পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডারকে। মেহেদি মিরাজের তালুবন্দি হওয়ার আগে মালিক ১২ বলে করেন ১৪ রান। দলীয় ১১২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ভাইকিংস।
দলীয় ১১৭ রানের মাথায় বিদায় নেন তামিম। ইনিংসের ১৭তম ওভারে তামিমকে ফেরান উইলিয়ামস। সামিত প্যাটেলের তালুবন্দি হওয়ার আগে তিনি ৪৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে করেন ৫১ রান। তামিমের পর বিদায় নেন আনামুল হক বিজয় (১১)। ফরহাদ রেজার বলে মেহেদি মিরাজের তালুবন্দি হন বিজয়।
ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন মোহাম্মদ নবী। আফগান তারকা রানআউট হওয়ার আগে করেন ৫ রান। ইনিংসের ১৯তম ওভারে দলীয় ১৩১ রানের মাথায় ছয় ব্যাটসম্যানকে হারায় ভাইকিংস। একই ওভারে উইলিয়ামস ফেরান আবদুর রাজ্জাককে (০)। শেষ বলে উইলিয়ামস এলবির ফাঁদে ফেলেন তাসকিনকে (০)। ১১ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন জহুরুল ইসলাম।
রাজশাহীর হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট তুলে নেন উইলিয়ামস। ফরহাদ রেজা নেন দুটি উইকেট।
চিটাগং ভাইকিংসের ছুঁড়ে দেওয়া ১৪৩ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে শুভাশিস রায়ের বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মুমিনুল হক (৪)। আর পরের ওভারের প্রথম বলে আব্দুর রাজ্জাকের বলে শূন্য রানে আউট হন নতুন ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন। এরপর ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি সাব্বির রহমান। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে শুভাশিস রায়ের বলে মোহাম্মদ নবীর হাতে ধরা পড়ার আগে সাব্বির করেন ১১ রান। দলীয় ৩৯ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী।
এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন সামিত প্যাটেল এবং নুরুল হাসান সোহান। তবে, স্কোরবোর্ডে আর মাত্র ১৪ রান উঠতেই বিদায় নেন প্যাটেল। ইনিংসের দশম ওভারে মোহাম্মদ নবী বোল্ড করে ফেরান ৫ রান করা প্যাটেলকে। দলীয় ৫৩ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলে রাজশাহী।
দলীয় ৫৫ রানের মাথায় বিদায় নেন সেট ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান। ইনিংসের ১১তম ওভারের প্রথম বলে সাকলাইন সজীবকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ দেন শোয়েব মালিকের হাতে। মালিক বাউন্ডারিতে ক্যাচটি লুফে নিলেও শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পেরে সেটি তুলে দেন জহুরুলের হাতে। বিদায় নেওয়ার আগে নুরুল হাসান সোহান ২৮ বলে দুই চার আর একটি ছক্কায় করেন ৩৪ রান। একই ওভারের শেষ বলে সাকলাইন সজীব বোল্ড করেন জেমস ফ্রাঙ্কলিনকে (২)।
এরপর দারুণ জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং দলপতি ড্যারেন স্যামি। ২০ বলে তারা তুলে নেন ৩৭ রান। ইনিংসের ১৫তম ওভারে রানআউট হন ১০ রান করা মিরাজ। দলীয় ৯৪ রানের মাথায় সপ্তম উইকেট হারায় কিংসরা।
২৭ বলে ৭টি চার আর দুটি ছক্কায় অপরাজিত ৫৫ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ফরহাদ রেজা ১১ বলে ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটি থেকে আসে ৪৯ রান। ১৮.৩ ওভার জয় তুলে নেয় রাজশাহী।