ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্প ট্রাম্পের করা ‘পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইটারের সঙ্গে ‘আঁতাতে’র মাধ্যমে ফেইসবুক ‘ট্রাম্প-বিরোধী’ কর্মাকাণ্ড চালিয়েছে বলে এক টুইটে অভিযোগ তোলেন।
একই অভিযোগ নিউ ইয়র্ক টাইসম ও ওয়াশিংটন পোস্ট-এর মতো গণমাধ্যমগুলোর প্রতিও তোলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে ফেইসবুকে একটি বিবিৃতি প্রকাশ করেছেন জাকারবার্গ, যেখানে স্পষ্টতই উঠে এসেছে রাজনৈতিক এই বিষয়টি নিয়ে তার হতাশার কথা।
বিবৃতিতে জাকারবার্গ দাবি করেছেন, ফেইসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক ধারণার মানুষদের মত প্রকাশের একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সেইসঙ্গে এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে অন্য কোনো দেশ যাতে নির্বাচন বিষয়ে ভুল তথ্যের প্রচার না করতে পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক ছিলেন তিনি।
জাকারবার্গের এই পোস্ট প্রকাশের দুইঘন্টার মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়, অর্জন করে ৬৫ হাজারেরও বেশি লাইক।
৩৩ বছর বয়সী ফেইসবুকের এই প্রতিষ্ঠাতা আরও জানান, নির্বাচনের সময়টাতে রাজনৈতিক প্রচারণার জন্য ফেইসবুকে কোটি কোটি ডলার ঢালা হয়েছে, যেখানে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে হাজারগুণ বেশি ‘সমস্যাযুক্ত’ বিজ্ঞাপনের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন তারা।
তিনি দাবি করেন, ওইসব ‘সমস্যাযুক্ত বিজ্ঞাপন বাদ দিলে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে ফেইসবুকের অবদান কম নয়।
তিনি বলেন, ‘ফেইসবুক জনগণকে কণ্ঠ দিয়েছে; প্রার্থীদের সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ করে দিয়েছে, লাখ লাখ মানুষকে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে, সাহায্য করেছে।’
বড় দুই রাজনৈতিক শক্তি নির্বাচনের সময় ফেইসবুকে যার যার অপছন্দের বিষয় দেখে হতাশ হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি। ট্রাম্পের জয়ে সুযোগ করে দেওয়ায় উদারপন্থিরা তাকে অভিযুক্ত করেন বলেও মন্তব্য জাকারবার্গের।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ে কংগ্রেসের তদন্ত দলকে তিন হাজারেরও বেশি বিজ্ঞাপনের তথ্য দেওয়ার কথা ফেইসবুকের। সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যমের ধারণা, নির্বাচনের সময় ও পরে দেওয়া এসব বিজ্ঞাপনের পেছনে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত থাকতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের তদন্ত সংস্থাগুলোর দাবি, ২০১৬-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতাতে রাশিয়ার ভূমিকা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের একটি কমিটি ও এফবিআই এই বিষয়ে তদন্ত করলেও ক্রেমলিন শুরু থেকেই মার্কিন নির্বাচনে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
নির্বাচনী প্রচারের সময় রিপাবলিকান শিবিরের কর্মকর্তারা রাশিয়ার সঙ্গে অনৈতিকভাবে যোগাযোগ করেছেন, এমন অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছেন ট্রাম্পও।
নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ে তথ্য দিতে ফেইসবুক, গুগল ও টুইটারকে চিঠি দিয়েছে সিনেটের ইন্টিলিজেন্স কমিটি।
সূত্র : বিবিসি অনলাইন