চলতি মে মাসের শেষ দিকে ব্রাসেলসে নেটো এবং সিসিলিতে জি সেভেনের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগেই তিনি মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।
ধর্মীয় সংগঠনগুলোর কর কমানোর বিষয়ে নির্বাহী আদেশ জারি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের এ ঘোষণা আসে। তিনি বলেন, শান্তির চাবিকাঠি আছে পরমত সহিষ্ণুতার মধ্যে।
“আমার এই সফর শুরু হবে সৌদি আরবে ঐতিহাসিক এক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে, যেখানে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা আসবেন। উগ্রবাদ, সন্ত্রাস আর সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের মুসলিম মিত্রদের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন ভিত্তি তৈরির কাজ শুরু হবে সেখানে।”
ট্রাম্প বলেন, “কাদের কীভাবে চলা উচিৎ সেটা নিয়ে কথা বলা আমাদের কাজ নয়। বরং সেই মিত্রদের সঙ্গে, অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের জোট বাঁধতে হবে, যারা সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা আনার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করে।”
হোয়াইট হাউজ আগেই জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সৌদি আরব ও ইসরায়েল সফরের ইচ্ছা রাখেন। তবে এটাই যে তার প্রথম বিদেশ সফর হবে- তখন তা বলা হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্য দিয়ে সফর শুরুর পর ২৫ মে ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে ভ্যাটিকানে যাত্রা বিরতি করবেন ট্রাম্প। ২৪ মে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তার বৈঠক হতে পারে বলে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
রয়টার্স লিখেছে, ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামার সময়ে সৌদি আরব ও ইসরায়েল- দুই মিত্রের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন তৈরি হয়েছিল। সৌদি ও ইসরায়েলি নেতাদের অভিযোগ ছিল, ওবামা পুরনো মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার চেয়ে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে চুক্তি করতেই বেশি মনোযোগী।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি এবং ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়টি তার পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রেই থাকবে।
গত সপ্তাহে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অর্থ বেরিয়ে গেলেও সৌদি নেতাদের কাছ থেকে ‘ন্যায্য আচরণ’ মিলছে না।
এর আগে সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন্স প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গত মার্চে ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই ঘটনাকে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘ঐতিহাসিক বাঁক বদলের মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন সৌদি আরবের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে গিয়ে বৈঠক করার পর ট্রাম্প তার জামাতা জারেড কুশনারকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনায় মধ্যস্ততার দায়িত্ব দেন।
গত বুধবার হোয়াইট হাউসে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গেও ট্রাম্পের বৈঠক হয়। তবে দীর্ঘদিন থমকে থাকা শান্তি আলোচনায় কীভাবে গতি আনা হবে, তার কোনো আভাস এখনও ট্রাম্পের দিক থেকে পাওয়া যায়নি।