প্লে-অফে ওঠার বাঁচা-মরার ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ে বিপিএলের কোয়ালিফায়ার-১ নিশ্চিত করেছে খুলনা টাইটান্স। ঢাকা ডায়নামাইটসের দেয়া ১৫৯ রানের লক্ষ্যটা ছয় উইকেট ও ১২ বল হাতে রেখেই টপকে যায় খুলনা। অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
পয়েন্ট টেবিলে পাঁচ থেকে দুইয়ে উঠে এসেছে খুলনা (১৪)। পাঁচে নেমে যাওয়ায় আসর থেকে বিদায় নিল রংপুর রাইডার্স। তৃতীয় স্থানে অবনমনে চিটাগং ভাইকিংসকে এলিমিনেটর বাধা পেরোতে হবে। প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংস। দু’দলের পয়েন্টই সমান ১২।
অন্যদিকে, সরাসরি ফাইনালের লক্ষ্যে শীর্ষে থাকা ঢাকার (১৬) বিপক্ষেই মাঠে নামবে খুলনা। অাগামী ৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) এলিমিনেটর ও কোয়ালিফায়ার-১ ম্যাচ দু’টি অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে এলিমিনেটর জয়ী ও কোয়ালিফায়ার-১ এর পরাজিত দল।
টুর্নামেন্টে দু’বারের দেখাতেই শেষ হাসি হাসলো খুলনা শিবির। গত ১৯ নভেম্বরের ম্যাচটিতে ৯ রানে হেরেছিল ঢাকা। এবার দু’দলের তৃতীয় লড়াইয়ের অপক্ষা।
১৮তম ওভারে তানভির হায়দারের বলে আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন ম্যাচসেরা মাহমুদউল্লাহ। তাতে ছিল ৫টি চার ও ২টি ছক্কার মার। অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দেন ১৬ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকা বেনি হাওয়েল।
জয়ের লক্ষ্যে শুরুতেই (৯) হোঁচট খায় খুলনা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৯) ক্লিন বোল্ড করেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের পার্টনারশিপে চাপ সামাল দেন মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান ও আব্দুল মজিদ।
দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ফেরেন ওপেনার হাসানুজ্জামান। নবম ওভারে রবি বোপারার বলে রন্সফোর্ড বিটনের ক্যাচবন্দি হওয়ার অাগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ৪০। তাতে ছিল তিনটি করে চার-ছক্কার মার।
ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ৩৬ বলে মাত্র ২১ রান করে আউট হয়েছেন আব্দুল মজিদ। দলীয় ১০৭ রানে রবি বোপারার করা ১৪তম ওভারে ক্লিন বোল্ড হন তিনি। তার আগে মজিদকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৪৬ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ।
ঢাকার হয়ে বোপারা দু’টি উইকেট লাভ করেন। একটি করে নেন সাকিব ও তানভির।
এর আগে কুমার সাঙ্গাকারার অর্ধশতকে নির্ধারিত ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে সাত উইকেট হারিয়ে লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় ঢাকা। রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ (৪২তম) ম্যাচটিতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
দ্বিতীয় ওভারেই ব্রেকথ্রু এনে দিতে পারতেন শুভাগত হোম। ব্যক্তিগত ২ রানে জীবন পান কুমার সাঙ্গাকারা। মিড-অনে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন বেনি হাওয়েল। এর খেসারতই দিয়ে হয় খুলনাকে।
ঢাকাকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার সাঙ্গাকারা ও মেহেদী মারুফ। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে আসে বিনা উইকেটে ৫৫। সপ্তম ওভারে মারুফের (১৬) রানআউটে প্রথম ব্রেকথ্রু পায় খুলনা।
অর্ধশতক হাঁকিয়ে ফেরেন সাঙ্গাকারা। ১২তম ওভারে তাকে বোল্ড করে ক্যাচ মিসের প্রায়শ্চিত্ত করেন হাওয়েল। ততক্ষণে ৮টি চারের সাহায্যে ৪১ বলে ৫৯ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন লঙ্কান ব্যাটিং জিনিয়াস।
মারুফের পর রানআউটের শিকার হন নাসির হোসেন (১৯)। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে প্রথম চেষ্টায় সাকিব আল হাসানকে রানআউট করতে ব্যর্থ হলেও স্ট্রাইকিং প্রান্তে বল ছুঁড়ে স্ট্যাম্প ভাঙেন বোলার মাহমুদউল্লাহ। এ যাত্রায় বেঁচে গেলেও খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ঢাকা দলপতি।
পরের ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন জুনাইদ খান। সাকিবকে (১১) আন্দ্রে ফ্লেচারের ক্যাচবন্দি করার পর সেকুজে প্রসন্নকে (১৪) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন পাকিস্তানি পেসার। ১৯তম ওভারে রবি বোপারাকে (৬) ফেরান জুনাইদ। আর শেষ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনকে (২০) বোল্ড করে উইকেটের খাতায় নাম লেখান শফিউল ইসলাম।