টানা বর্ষণে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ী সদরের বসন্তপুর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার ওয়ানওয়ে সড়ক। বৃষ্টিতে মহাসড়কের বিটুমিন উঠে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দ। এতে করে ঝুঁকি নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত এই মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে ধীরগতিতে। সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের এ এলাকায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এই ১৪ কিলোমিটার। দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শত শত যানবাহন বসন্তপুরের অদূরে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় এসে ফেরিঘাটের উদ্দেশে একমুখী সড়কে মিলিত হয়। অপরদিকে ফেরি থেকে নামার পর যানবাহনগুলো দ্রুতগতিতে গন্তব্যের উদ্দেশে ঘাট ছাড়ে। দ্রুত ফেরিতে উঠতে এবং ফেরি থেকে নেমে গন্তব্যে যেতে উভয়মুখী গাড়ি এক প্রকার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এ কারণে এই ১৪ কিমি এলাকা সর্বদা ব্যাস্ত ও ঝুঁকিপ্রবণ থাকে। কিন্তু মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। পুরো এলাকায় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বহু জায়গায় সড়ক থেকে উঠে গেছে কার্পেটিং। সড়কের গর্তের জন্য ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। গত ঈদুল ফিতরের আগে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে মহাসড়কের এ এলাকায় সংস্কার কাজ করা হয়। এদিকে মহাসড়কটির গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮৫ মিটার এলাকা ডিভাইডারসহ ফোর লেনে উন্নীত করার কাজ শেষ হতে না হতেই অন্তত ছয় স্থানে ধসে গেছে। ঠিকাদার সেগুলো জরুরিভিত্তিতে মেরামত করছে। এর বাইরে সওজের কর্মীরা মহাসড়কের বড় বড় গর্ত সাময়িকভাবে ইট-খোয়া ও হালকা বিটুমিন দিয়ে সংস্কার করলেও ছোট গর্তগুলো সেভাবেই থেকে যাচ্ছে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে চাকার ঘর্ষণে ছোট গর্তগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে। ট্রাকচালক আ. রহমান জানান, গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত অসংখ্য খানাখন্দের কারণে তাদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে একদিকে যেমন গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে তেমনি নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। আসন্ন কোরবানির ঈদের আগে সড়ক সংস্কার না করলে ঈদে ঘরমুখী মানুষ ও গরুবোঝাই ট্রাক চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্ক দেখা দিয়েছে। টেম্পোচালক হযরত মিয়া, ফজলু শেখ, বাদল মিয়াসহ অনেকেই বলেন, মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছাতে আগে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগত। এখন লাগে ২৫ মিনিট। খানাখন্দের কারণে অহরহ টায়ার ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটছে। এ ব্যাপারে রাজবাড়ীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহারিয়ার রুমি জানান, বিটুমিনের প্রধান শত্রু পানি। দিনের একটা লম্বা সময় মহাসড়ক ভিজে থাকছে। ভেজা সড়কের ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পরিমাপ করা হয়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের সংস্কারের জন্য বিভাগীয় ব্যবস্থাপনায় তারা কাজ শুরু করেছেন। কার্পেটিংসহ বড় ধরনের সংস্কারের জন্য পরবর্তী সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাওয়া হবে।