উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর এক স্বাভাবিক চিত্র- পড়াশোনায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু গরীব দেশগুলোতে এই দৃশ্য পুরোপুরি উল্টো। আর আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের অনেক জায়গায় পড়াশোনা করা মেয়েদের দেখা পাওয়া বিরল এক ঘটনা।
তালিকায় যে ১০টি দেশ স্থান পেয়েছে সেগুলোর বেশির ভাগ স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতি নেই। দেশগুলো দুর্বল। বেশির ভাগ নাগরিক দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর আছে রোগ, পুষ্টির অভাব ও যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যূত হওয়ার অভিশাপ।
সেখানকার মেয়েদের খুবই অল্প বয়স থেকে স্কুলে যাওয়ার পরিবর্তে যোগ দিতে হয় কাজে। আর ভবিষ্যতে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ চিরতরে মরে যায় অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার মধ্য দিয়ে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতপূর্ণ এলাকার মেয়েদের স্কুলে না যাওয়ার হার অন্যান্য এলাকার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। তবে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়ায় ওয়ান ক্যাম্পেইনের তালিকায় যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
তালিকা অনুযায়ী, নারী শিক্ষায় সবচেয়ে খারাপ ১০টি দেশ হলো-
দক্ষিণ সুদান: বিশ্বের সবচেয়ে নবীন দেশটি সংঘাত আর যুদ্ধে বিপর্যস্ত। ধ্বংস হয়ে গেছে স্কুল-কলেজ। বাস্তুচ্যূত লাখ লাখ পরিবার। দেশটির প্রায় ৭৫ শতাংশ মেয়ে প্রাথমিক স্কুলেই যাওয়ার সুযোগ পায় না।
মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র: প্রতি ৮০ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছে মাত্র একজন শিক্ষক।
নাইজার: ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন।
আফগানিস্তান: লিঙ্গ বৈষম্য বিশাল। ছেলেদের তুলনায় স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতি অনেক কম।
শাদ: মেয়ে শিশু ও নারীদের শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাধা রয়েছে।
মালি: প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পাড়ি দিতে পারে মাত্র ৩৮ শতাংশ মেয়ে।
গিনি: ২৫ বছরের ঊর্ধ্বের নারীদের গড় শিক্ষা জীবন এক বছরেরও কম।
বুরকিনা ফাসো: মাত্র এক শতাংশ মেয়ে মাধ্যমিক স্কুল শেষ করতে পারে।
লাইবেরিয়া: প্রাথমিক স্কুলে যাওয়ার মতো শিশুদের প্রায় ৬৬ শতাংশই স্কুলে যায় না।
ইথোপিয়া: ১৮ বছর বয়সের আগে প্রতি পাঁচজনে দুজন মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়।
সার্বিকভাবে দরিদ্র দেশগুলোর এক সাধারণ সমস্যা শিক্ষকের স্বল্পতা। গত বছর জাতিসংঘ জানিয়েছিল, শিক্ষা ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্র অর্জনে বিশ্বব্যাপী ২০৩০ সালের মধ্যে আরও সাত কোটি ৯০ লাখ শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।