কালচে পানি আর উৎকট গন্ধে বছরজুড়েই এই সড়কে। পূর্ব জুরাইনের ৫৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ যেন শেষ হওয়ার নয়।
ছবি : শামীম আহম্মেদ
রাজধানীর পূর্ব জুরাইনে ৫৩ নং ওয়ার্ডে বহু বছর ধরে এই এলাকায় ড্রেন আর স্যুয়ারেজের পানি উঠে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ২০১০ সালের দিকে কিছুটা কম ছিল। এখন আবার ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে থইথই অবস্থা। ভোটের সময় এলাকাবাসীর একটি মাত্র দাবি থাকে কমিশনার গলির পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা গ্রহণের। প্রার্থীরা অঙ্গীকার করলেও ভোটের পর তা বেমালুম ভুলে যান।
ছবি : শামীম আহম্মেদ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব জুরাইন রাস্তার অবস্থা বাস্তবিকই খুব নাজুক। রাস্তার ওপর স্যুয়ারেজ আর ড্রেনের নোংরা পানি জমে আছে বছরের পর বছর ধরে। তা থেকে অনবরত চারদিকে দুর্গন্ধ ছাড়াচ্ছে। মশা-মাছি, আবর্জনা, বাসাবাড়ির ময়লার স্তূপ, মনুষ্য বর্জ্য ইত্যাদি ভেসে আছে জমে থাকা ময়লা পানিতে। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে পারাপারেরও সুযোগ নেই।
ছবি : শামীম আহম্মেদ
তলিয়ে থাকা গর্তে পড়ে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। রাস্তার পাশের অর্ধশত দোকান বন্ধ করে অন্যত্র চলে গেছে ব্যবসায়ীরা। বাসাবাড়িতে অনেকটা বন্দি অবস্থায় আছে সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে ঘুরেও ফল হয়নি।
ছবি : শামীম আহম্মেদ
দুই পাশের ড্রেনগুলোও সয়লাব। প্রায় ২০ ফুট চওড়া রাস্তাটি দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে। রিকশা-ভ্যান দিয়ে লোকজন যাতায়াত করছে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বেশির ভাগ পথচারীকে নাক চাপতে হচ্ছে।
ছবি : শামীম আহম্মেদ
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাত্রাবাড়ী হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে চলাচল করে। নিত্যদিন তাদের পোহাতে হচ্ছে দুর্বিষহ যন্ত্রণা। তা ছাড়া রাস্তার আশপাশের প্রায় সব বাসাবাড়ির নিচতলায় মাঝেমধ্যেই ময়লা পানি ঢুকে পড়ে। নোংরা পানির মধ্যে চলাচল করে বেশির ভাগ শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
৫২ নং ওয়ার্ডের মিষ্টির দোকান, কালার বাজার, কুসুম বাগ প্রায় দুই বছর ধরে কী যে কষ্টে আছে এলাকার বাসিন্দারা যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারা যায় না। রাস্তায় ময়লা পানি জমে থাকে সারাক্ষণ। আর একটু বৃষ্টি হলে দোকানও তলিয়ে যায়। এসব পানি বালতি ভরে বাইরে ফেলে আবার দোকানে কাজ শুরু করি। সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা অন্যান্য যানবাহন চলাচলের সময় পানি ছিটে দোকানে আসে। এতে সব সময় দোকান স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে।
এমন অবস্থা ৫২ নং ওয়ার্ডের কুদরত আলী বাজারেও দেখা যায়।
সড়কে থাকা বেশির ভাগ দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনো রকম খুলে বসে থাকলেও সারা দিনে কোনো ক্রেতার দেখা মেলে না। মানুষ কষ্ট করে রিকশা-ভ্যান দিয়ে শুধু রাস্তা পার হতে পারে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পরতে হয় দৈনিক নানা সমস্যায়। অনেক কষ্ট করে তাদের স্কুল-কলেজে যেতে হয়।
এই এলাকার বাসিন্দারা বলেন, “কবে তারা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবো আমরা? আমাদের এলাকার জনপ্রতিনিধির কাছে আমরা বার বার অভিযোগ করেও কোনো মুক্তির উপায় দেখছিনা।আমরা মুক্তি চাই!!!”