বগুড়ায় কলেজ ছাত্রী ও তার মাকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন পৌরসভার নারী কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকি ও তার লোকজন। মার্জিয়া পৌরসভার ৪,৫, ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর।
শুক্রবার বিকেলে ওই নারী কাউন্সিলরের বাসায় এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হলেন- কলেজছাত্রী সোনালি ও তার মা মুন্নি বেগম।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে মুন্নি বেগম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পরে সদর থানা পুলিশ রাতেই ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন, তুফান, দিপু রোপন ও আতিক।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, সোনালি এ বছর এসএসসি পাস করেছেন। ভালো কলেজে ভর্তির জন্য সে কাউন্সিলর মার্জিয়া হাসান রুমকির বোনের জামাই তুফান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তুফানের স্ত্রী আশা অভিযোগ তুলেন যে সোনালি তার স্বামীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। এই অভিযোগে শুক্রবার সকালে কাউন্সিলর রুমকি শহরের চকসুত্রাপুর বেগম বাজার লেনে সোনালিদের ভাড়া বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে দেন।
কেন বাসায় তালা ঝুলানো হয়েছে একথা জানতে সোনালি ও তার মা বিকেলে কাউন্সিলরের বাসায় যান। এসময় রুমকি তার মা রুমি ও বোন আশাসহ কাউন্সিলরের ক্যাডাররা মা-মেয়েকে পিটিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন।
আহত সোনালিকে শুক্রবার রাতে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সোনালি বলেন, রুমকি মামির বাসায় যাওয়ার পর তার ক্যাডার মুন্না এসে প্রথমে আমার বেণী কেটে দেন। তারপর আম্মুকে একটা পায়ে লাঠি দিয়ে মারেন। আর বলতে থাকেন সব দোষ তোর। তুই টাকা খাইছিস। পরে আমি আম্মুর সামনে দাঁড়াই। তারপর আমাকে প্রথমে মুন্না মারেন, তারপর রুমকি মামি, রুমকি মামির মা আমার চুল কাটেন, আমার মায়েরও চুল কেটে দেন।
নির্যাতনের শিকার মুন্নী বেগম বলেন, আমাকে ও আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে আমাদের পাড়ার রুমকি কমিশনার, তার মা ও বোন আশা। প্রথমে আমাদের তারা স্টিলের পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটান। তারপর আমাদের আধমরা করে চুল কেটে দেন। আমার মেয়ের বেণী করা ছিলো। রুমুকি তার মা ও বোন মিলে আমাদের চুল কেটে দেন।
তবে সোনালি আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।
নির্যাতিতা মুন্নী বেগম বাদী হয়ে ১০ জনের নামে মামলা করেছে। এর মধ্যে রাতেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার মূল আসামি রুমকি, তার মা রুমি ও ছোটবোন আশা পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।