মাদ্রাসায় পড়ার সময় থেকেই জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে সাইফুল। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামের জামায়াত নেতা আবুল খায়েরের একমাত্র ছেলে সাইফুল। তার বাবা স্থানীয় মাঠেরহাট জামে মসজিদের ইমাম। গতকাল সাইফুল আত্মঘাতী হওয়ার পর ডুমুরিয়া থানা পুলিশ তার বাবাকে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসতে থাকে সাইফুলের পরিবারের জামায়াত-জঙ্গি সম্পৃক্ততা সম্পর্কিত তথ্য। জানা গেছে, সাইফুল খুলনার বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় মাদ্রাসায় লেখাপড়ার মধ্য দিয়েই। ডুমুরিয়ার উল্লা মাদ্রাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল এবং খুলনার আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ২০১৪ সালে আলিম পাস করে সাইফুল। এরপর ভর্তি হয় বিএল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। তার বড় বোন সাবিহা খাতুন ইরানি ও ছোট বোন তামান্না খাতুনও স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। আর বাবা আবুল খায়ের সাহস ইউনিয়ন জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ। এক সপ্তাহ আগে চাকরির কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলেও গতকাল বাসায় ফেরার কথা ছিল সাইফুলের। ঢাকায় থাকাকালীন পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগও ছিল তার। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যুর পর শেষ পর্যন্ত বাড়িতে ফেরা হল না তার। বিএল কলেজে পড়ার সময় সাইফুল খুলনা শহরের নেভি কলোনি এলাকায় থাকত। ডুমুরিয়ার নোয়াকাটি গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, আবুল খায়ের তার প্রতিবেশী। জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে তাকে নোয়াকাঠি মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের ইমামের পদ থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর মাঠেরহাট মসজিদে ইমামতি শুরু করেন আবুল খায়ের। সাইফুলের বড় বোন ইরানি স্থানীয় জিলের ডাঙ্গা মাদ্রাসার আলীমের ছাত্রী এবং ছোট বোন তামান্না রাজাপুর মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সাইফুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার সর্বশেষ কথা হয় তার সঙ্গে। এ সময় সাইফুল জানিয়েছিল মঙ্গলবার বাড়ি ফিরবে। বাড়ির সদস্যরাও তার ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আত্মঘাতী হওয়ার খবর এবং বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর হতবাক হয়ে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। ডুমুরিয়া থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন জানান, জঙ্গি সাইফুলের আত্মঘাতী হওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর তার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবুল খায়ের মোল্লাকে থানা পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সাইফুলের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততার সত্যতাও মিলেছে।