ইয়াসির শাহর ফ্লাইটেট ডেলিভারী পেয়ে লোভ সামলাতে পারলেন না শ্যানন গ্যাবরিয়েল। ভিতরে সব ফিল্ডার, চেয়েছিলেন ওভার দ্যা টপে বল বাউন্ডারিতে পাঠাতে।
কিন্তু লেগ স্পিনারের ঘূর্ণিতে বধ গ্যাবরিয়েল। ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত করল স্ট্যাম্পে। ১১তম বারের মত ইয়াসির শাহ পেলেন পাঁচ উইকেট। ১০১ রানে পাকিস্তান পেল জয়। ৩০৪ রানের জবাবে ২০২ রানে অলআউট ওয়েষ্ট ইন্ডিজ। ২-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ পাকিস্তানের। প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজ জিতল পাকিস্তান।
এতো প্রাপ্তির মধ্যেও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের চোখে-মুখে হতাশা! বিষাদময় মুখগুলো বলে দিচ্ছিল বড় কিছু হারাতে যাচ্ছে তারা। সত্যিই তাই। বড় প্রাপ্তির ম্যাচে দুই সিনিয়র ক্রিকেটারকে হারিয়েছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এ ম্যাচ দিয়েই বিদায় নিলেন দলের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক ও দলের সবথেকে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান ইউনিস খান। সতীর্থরা জয় দিয়ে বিদায় দেন দুই ক্রিকেটারকে। সতীর্থদের কাঁধে চড়ে শেষবারের মতো মাঠ ছাড়েন ইউনুস-মিসবাহ।
রোববার ডোমিনিকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পুরোদিন লড়াই করে। কিন্তু শেষ দিকে এলোমেলো হয়ে যায় ক্যারিবীয় শিবির। লড়াইয়ের নেতৃত্বে ছিলেন রোস্টন চেইস। তার বিরোচিত ইনিংসে ম্যাচ প্রায় ড্র করে ফেলেছিল স্বাগতিক দল। কিন্তু শ্যানন গ্যাবরিয়েলের ওই শটে শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিরোধ। ইয়াসির শাহর ওই ওভারের পর দিনের খেলার বাকি ছিল মাত্র এক ওভার। শেষ ওভার নিজে খেলবেন বলে পঞ্চম বলে সিঙ্গেল নেননি রেইস। কিন্তু ষষ্ঠ বলেই আউট গ্যাবরিয়েল। দিনের মাত্র এক ওভার বাকি থাকতে এমন আউটে বিস্মিত পুরো ক্যারিবীয় শিবির। অন্যদিকে উৎসবের মঞ্চে পরিণত হয় পাকিস্তান শিবির।
৭ রানে শেষ দিনের খেলা শুরু করেন ব্রেথওয়েট (৩) ও শিমরণ হেটমায়ের। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ব্রেথওয়েট। ৩ রান যোগ করে আউট হন ইয়াসির শাহর বলে। এরপর মোহাম্মদ আমিরের বলে বোল্ড হন হেটমায়ের। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে হোপের (১৭) উইকেট হারায় স্বাগতিক দল। প্রথম সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে রোস্টন চেইস সেই চাপ কিছুটা কমিয়ে দেন। পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে একাই লড়াই করেন তিনি। তবে ভাগ্যটাকেও পাশে পেয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। হাসান আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে জীবন পেয়েছেন। আবার মোহাম্মদ আব্বাসের নো বলের কল্যাণেও উইকেটেও টিকে যান। ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেও দলের হার এড়াতে পারেননি। ২৩৯ বলে ১২ চার ও ১ ছক্কায় ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন চেইস। পাঁচে নেমে উইকেটে টিকে থাকেন ৩৬৬ মিনিট। পড়ন্ত বিকেলে ইয়াসিরের পাঁচ উইকেটে সিরিজ জয়ের সুযোগ হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন রোস্টন চেইস। ৩ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা ইয়াসির শাহ।