সত্যিই অসাধারণ, অকল্পনীয়, রুদ্ধশ্বাস আর নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ একটা ম্যাচ। লো স্কোরিং ম্যাচেও এত উত্তেজনা থাকবে পরতে পরতে, তা ভাবাই যায় না।
কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করে বিপিএলে রোমাঞ্চকর এক জয়ই তুলে নিয়েছে রাজশাহী কিংস। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সকে ৪৯ রানে হারিয়েছে সাব্বির-স্যামির রাজশাহী। ব্যাট হাতে ৩৩ বলে অপরাজিত ৪১ ও বল হাতে দুই উইকেট নেয়া রাজশাহীর মেহেদী হাসান মিরাজ পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
বিপিএলে এমন ম্যাচ এবারের আসরে কমই হয়েছে। যেখানে রাজশাহী হারবে, এটা ছিল সবার ধারণা। সেখানে জিত রাজশাহীরই, হার রংপুরের। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে কাঁপছিল রাজশাহী। তবে অষ্টম উইকেটে মিরাজ-ফরহাদের ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি রাজশাহীকে পৌছে দেয় ১২৮ রানের সম্মানজনক স্কোরে। যা ছিল বড় বিস্ময়ই।
জিততে হলে রংপুরকে করতে হবে ১২৯। এমন মামুলি টার্গেট সহজেই ছুঁবে রংপুর, এমন বদ্ধমূল ধারণা ছিল সবার। সেটা রংপুরের আগের জয়গুলো দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু এমন লো স্কোরিং ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের ব্যাটিং লাইনআপও হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে, তা ভাবেননি কেউ।
রাজশাহী ৪৩ রানে হারিয়েছিল সাত উইকেট। রংপুর সাত উইকেট হারালো ৫৮ রানে। একে একে বিদায় নিলেন সৌম্য সরকার (১), মোহাম্মদ শেহজাদ (১২), নাসির জামশেদ (১), লিয়াম ডসন (২), শহীদ আফ্রিদি (৭), মোহাম্মদ মিথুন (২০), জিয়াউর রহমান (৫)।
এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহীর হয়ে হাল ধরেছিলেন মিরাজ ও ফরহাদ রেজা। কিন্তু রংপুরের হয়ে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি কেউই। টপঅর্ডারের পথেই হেটেছে লোয়ার অর্ডার। ১৭.৪ ওভারে মাত্র ৭৯ রানে অলআউট হয় রংপুর রাইডার্স।
রাজশাহীর হয়ে আবুল হাসান ও নাজমুল তিনটি, মিরাজ দুটি, সামি ও প্যাটেল একটি করে উইকেট লাভ করেন। দারুণ এই জয়ে পয়েন্ট তালিকায় রংপুরকে পেছনে ফেলেছে রাজশাহী। ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে রাজশাহী। সমান ম্যাচে সমান ১০ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে রংপুর (নেট রান রেটে পিছিয়ে থাকায়)।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বিপদের মধ্যে ছিল রাজশাহী। ৪৩ রানে হারায় সাত উইকেট। অষ্টম উইকেট জুটিতে ফরহাদ রেজা ও মেহেদী হাসান মিরাজের অবিচ্ছিন্ন ৮৫ রান দলকে এনে দেয় সম্মানজনক স্কোর।
ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিনিক্স পাখির মতো দলকে টেনে তোলেন ফরহাদ রেজা ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রাজশাহী পায় লড়াইয়ের পুজি। এই জুটি যোগ করেন ৮৫ রান ৬৪ বলে, যা ছিল বিস্ময়করই।
৩২ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত থাকেন ফরহাদ রেজা। যার মধ্যে ছিল দুটি করে চার ও ছক্কা। অন্যদিকে ৩৩ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চার ও একটি ছক্কার মার। সাত উইকেটে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৮।