নিউজিল্যান্ড সফরটি হার দিয়েই শেষ করলো বাংলাদেশ। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির পর দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হলো সফরকারীরা। ক্রাইস্টচার্চে শেষ টেস্টে নয় উইকেটে হারের মধ্যদিয়ে এই পর্বের ইতি টানলেন সাকিব-তামিমরা।
শেষ টেস্টে এক কথায় তিন দিনেই জয় তুলে নিল নিউজিল্যান্ড। কারণ বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। আর দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর সহজ জয়ই তুলে নেয় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের দেওয়া ১০৯ রানে টার্গেট মাত্র ১৮.৪ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কেন উইলিয়ামসনের দল।
এর আগে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। যেখানে লিড দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০৮ রান। শেষ দিকে তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বির ব্যাটে ভর করেই লিড একশ’র ওপরে ওঠাতে পারে সফরকারীরা।
নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৩৫৪ করে সবকটি উইকেট হারায়। ক্রাইস্টচার্চে ম্যাচের তৃতীয় দিন বৃষ্টির কারণে কোনো বল মাঠে না গড়ালেও চতুর্থ দিন নির্দিষ্ট সময়ই খেলা শুরু হয়।
৬৫ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংযে নেমে শুরুতেই ওপেনার তামিম ইকবালের (৮) উইকেট হারায় সফরকারীরা। টিম সাউদির বলে মিচেল স্যান্টনারের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ দেখেশুনে খেলতে থাকেন।
প্রথম ইনিংসে দারুণ খেলার পর এদিনও ভালো কিছু শটে নিজের ইনিংস বড় করতে থাকেন সৌম্য। তবে দলীয় ৫৮ রানের মাথায় কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে আউট হন বাঁহাতি তিনি। ৬৪ বলে ছয় চারে ৩৬ রান করেন তিনি। উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। ব্যক্তিগত আট রানের সময় সাউদির বলে প্যাভিলিওনের পথ ধরেন।
ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ওয়াগনারের বলে সরাসরি বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। চার ওভার পরে সেই ওয়াগনারই তুলে নেন সাব্বিরকে। ব্যক্তিগত শূন্য রানে উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিংকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে ফের ওয়াটলিংয়ে ক্যাচে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন নুরুল হাসান সোহান।
এদিন একমাত্র টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করতে দেখা গেছে নাজমুল হোসেন শান্তকে। তবে ৬০ বলে ১২ রান করার পর ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হন তিনি। পরে উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি মেহেদি হাসান মিরাজ। ব্যক্তিগত চার রানে বোল্টের বলে টম লাথামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
নমব উইকেট জুটিতে ৫১ রান যোগ করেন তাসকিন আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি। মূলত তাদের ব্যাটে চড়েই একশ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। তাসকিন ৩০ বলে দুই ছক্কা ও একটি চারে ৩৩ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন। পরে বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন রাব্বি। আর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রুবেল হোসেন সাউদির বলে ব্যক্তিগত সাত রানে বিদায় নেন।
কিউই বোলারদের মধ্যে তিনটি করে উইকেট নেন বোল্ট, সাউদি ও ওয়াগনার। গ্র্যান্ডহোম পান একটি উইকেট।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে জিত রাভাল, টম লাথামের সাবলীল ব্যাটিং ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে চতুর্থ দিনেই জয় পায় নিউজিল্যান্ড। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে জিত রাভাল ৩৩ রানে আউট হলেও অপরাজিত থাকেন লাথাম ও গ্র্যান্ডহোম। লাথাম ৪১ ও গ্র্যান্ডহোম করেন ৩৩।
দুই ইনিংস মিলিয়ে আট উইকেট পাওয়া কিউই পেসার টিম সাউদি ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।
এর আগে বাংলাদেশ থেকে প্রথম ইনিংসে ২৯ রানে পিছিয়ে থাকা কিউইরা চতুর্থ দিনে বাকি তিন উইকেট হারিয়ে আরও ৯৪ রান যোগ করে। শেষ পর্যন্ত ৩৫৪ করতে সমর্থ হয় স্বাগতিকরা। হেনরি নিকোলস ৯৮ রান করে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হন। রান আউট হওয়া নেইল ওয়াগনার করেন ২৬ ও সাকিবে চতুর্থ শিকার টিম সাউদি করেন ১৭।
বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৮৯ রান করেছিল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ-২৮৯ ও ১৭৩
নিউজিল্যান্ড-৩৫৪ ও ১১১/১ (১৮.৪ ওভার)