টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপা খাতুনকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় হবে ১২ ফেব্রুয়ারি। সোমবার মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক পর্ব আজই শেষ হয়েছে। টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে যুক্তিতর্ক চলে।
রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এ কে এম নাছিমুল আক্তার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে আইনগত যুক্তি উপস্থাপন করেন। তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী আতাউর রহমান আজাদ, আব্দুল করিম ও এস আকবর খান। অন্যদিকে আসামিদের আইনজীবী ফারুক আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী প্রত্যেক আসামিকে নির্দোষ উল্লেখ করে তাঁদের বেকসুর খালাস দাবি করে আইনগত যুক্তি তুলে ধরেন।
উভয় পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক ১২ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন।
গত ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় মোট ২৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহন শ্রমিকেরা ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যান। পুলিশ ওই রাতেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।
রূপার ভাই গত ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে তাঁরা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর এবং সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁরা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে আছেন। ৩১ আগস্ট রূপার লাশ উত্তোলন করে তাঁর ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।