শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪ ১৭ই কার্তিক ১৪৩১
Smoking
 
অস্ট্রেলিয়ার পরাজয় অতঃপর বাংলাদেশ সেমিতে
প্রকাশ: ০৯:৩২ am ১১-০৬-২০১৭ হালনাগাদ: ০৯:৩৮ am ১১-০৬-২০১৭
 
 
 


ইংল্যান্ডের একেকটা রান হচ্ছে আর টেলিভিশন সেটের সামনে বসা বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীরা উল্লাসে ফেটে পড়ছেন! কোনো ক্রিকেট ম্যাচে এতবেশি সমর্থকের সমর্থন কি আগে কখনও পেয়েছিল ইংল্যান্ড? অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কালকের এ ম্যাচে পুরো বাংলাদেশ যে ইংলিশদের হয়ে হাততালি দেয়। কারণ আর কিছু নয়! ইংল্যান্ড এ ম্যাচ জিতলেই যে বাংলাদেশও ‘জিতে’ যায় আরও অনেক বড় কিছু। পেয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকেট! শেষ পর্যন্ত এ ম্যাচে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে বাংলাদেশের সমর্থনটা নিরর্থক হয়নি। অস্ট্রেলিয়াকে বৃষ্টি আইনে হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ড ৪০ রানে। স্বাগতিকদের জয়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশজুড়ে যে আনন্দধ্বনি শোনা গেল; সম্ভবত খোদ গোটা ইংল্যান্ডেও এমন উল্লাস হল না! জিতল ইংল্যান্ড। হারল অস্ট্রেলিয়া। আর সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। বার্মিংহামের এজবাস্টনে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার এ ম্যাচ যখন হচ্ছিল তখন আরেক শহর কার্ডিফে টেলিভিশনের সামনে বসে খেলা দেখছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ইংল্যান্ডের জয়ের অপেক্ষায় যে তারাও অধীর আগ্রহে ছিল। কাউকেই নিরাশ করেনি মরগানের দল। ডি/এল মেথডে ৪০ রানে ম্যাচ জিতে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দেয় চিরকালীন প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াকে। জয় থেকে ইংল্যান্ড মাত্র ৩৮ রান দূরে থাকতে এজবাস্টনে বৃষ্টি বাধায় পড়ে ম্যাচ। তখনও ম্যাচের ৫৮ বল বাকি। ৬ উইকেট অক্ষত। বৃষ্টি আইনেও ইংল্যান্ড সে সময় অনেক এগিয়ে ছিল। টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া! অথচ তারা এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে এসেছিল হট ফেভারিটের ট্যাগ নিয়ে। নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের ম্যাচ দুটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। এবং কাল সেই বৃষ্টি আইনে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে শেষ টুর্নামেন্ট। এ ম্যাচ জেতার আগেই টানা দুই ম্যাচ জিতে ইংলিশরা সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল। আর ‘এ’ গ্রুপ থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ চারে পৌঁছল। ১৫ জুনের সেমিফাইনালে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ভারত নয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা। এজবাস্টনে কাল টস জিতে ইংল্যান্ড বোলিং বেছে নেয়। শুরুটা মন্দ হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে প্রথম পাওয়ার প্লেতে হারালেও অ্যারন ফিঞ্চ ও স্টিফেন স্মিথ দলের ইনিংসকে বড় স্কোরের পথেই রাখেন। ফিঞ্চ হাফসেঞ্চুরি করে আউট হন। তবে আসল ধাক্কাটা খায় অজিরা ৫৭ রান করা অধিনায়ক স্মিথকে হারিয়ে। আর শেষের দিকে ব্যাটিংয়ে তারা ধসে পড়ল। ৪০ ওভারের সময় স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ২২০ রান। মনে হচ্ছিল স্কোর তিনশ’র বেশি ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু শেষের ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং একেবারে মুখ থুবড়ে পড়ল। এই ১০ ওভারে তারা রান তুলল মাত্র ৫৭। হারাল ৫ উইকেট। লেগ স্পিনার আদিল রশিদের বোলিংয়ের সামনে যেন দাঁড়াতেই পারল না অজিদের শেষের ব্যাটিং। রশিদ শিকার করলেন ৪ উইকেট। আর পেসার মার্ক উড তুলে নিলেন আরও ৪ উইকেট। বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিস না হলে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর যে ২৭৭ রানেও পৌঁছায় না। ৬৪ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৭১ রান করা ট্রাভিস হেড দলের সর্বোচ্চ স্কোরার। রান তাড়ায় নামা ইংল্যান্ড শুরুতে উইকেট হারিয়ে দারুণ বিপদে পড়ে। ৬ রানে বিদায় দুই ওপেনার। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান জো রুটও বিদায় নিলেন। ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা ম্যাচে পুরোপুরি ব্যাকফুটে। পিছিয়ে থেকেই লড়াই শুরু ইংল্যান্ডের। এবং একসময় দারুণ দাপুটে ভঙ্গিতে ম্যাচ জয়! সম্ভবত আগের দিনের কার্ডিফের ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংস থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছিল ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের সাফল্যের রূপকার ছিলেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। কাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সেই কীর্তির নায়ক ইয়ুন মরগান ও বেন স্টোকস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এ দুজন ১৫৯ রান যোগ করে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন। মরগান ৮৭ রান করে রানআউট হলেও স্টোকস চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তার প্রথম সেঞ্চুরিটা ঠিকই তুলে নিলেন। শেষ বিকেলের বৃষ্টিও অস্ট্রেলিয়ার হার বাঁচাতে পারেনি।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT