বাংলাদেশ সরকার (আওয়মী লীগ) সমালোচনা শুনতে এবং সেই অনুযায়ী সংশোধন হতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। রোববার ‘ভিজিট বাংলাদেশ প্রোগ্রাম’ এর আওতায় বাংলাদেশ সফররত ২৫ জন বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার (আওয়ামী লীগ) সমালোচনা শুনতে আগ্রহী এবং সংশোধন করতে আগ্রহী। এখানে গণতন্ত্র আমরা অনুসরণ করছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় বেগম জিয়া ও বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটি নসাৎ করার চক্রান্তে লিপ্ত। তারা একটি অস্বাভাবিক সরকার তৈরির পাঁয়তারায় আছে। যার জন্য তারা গণতন্ত্র সম্পর্কে কোনো প্রস্তাবনা আজ পর্যন্ত তুলে ধরতে পারেনি।’
ইনু বলেন, ‘বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মোড় বদলকারী অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করার ফলে খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে। সম্পদের উন্নয়ন হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষা হয়েছে এবং বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আরেক ধাপ উপরে উঠতে সক্ষম হয়েছে। এ চমৎকার অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধন হয়েছে সংবিধানের উপর আস্থা স্থাপন করার জন্য, চার নীতির উপর আস্থা স্থাপন করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘সমাজের চাহিদা ও রাষ্ট্রের ভূমিকাকে স্বীকার করে নিয়ে উদ্যোক্তা ও বাজার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এ চমৎকার উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এ উন্নয়নটি বাধা-বিঘ্নের মধ্য দিয়ে আমাদের অর্জন করতে হয়েছে। গত ৯ বছরে সন্ত্রাসীরা, আগুন সন্ত্রাসীরা, সম্প্রদায়িক শক্তি এবং তার পৃষ্ঠপোষক বিএনপির অস্বাভাবিক অগণতান্ত্রিক নাশকতা এবং অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মধ্যে উন্নয়নের কাজটা এগিয়ে নিতে হয়েছে। তা না হলে বাংলাদেশ আরও উন্নত হতে পারত।’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি সবাইকে বলেছি, যারা মনে করছেন চমৎকার উন্নয়নের মধ্যে গণতন্ত্রের কমতি আছে তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছি যে, সম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদ, আগুন সন্ত্রাসীদের রাজনীতির পাঠ থেকে ঝেটিয়ে বিদায় করা গণতন্ত্রের কমতি নয়, গণতন্ত্রের প্রাপ্তি হয়।’
গণতন্ত্রের প্রাপ্তি হয়েছে বলেই বাংলাদেশে সাংবিধানিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছি এবং উন্নয়ন সাধন করতে পেরেছি। ৯ বছরে আমাদের সরকার বাংলাদেশে অগণতান্ত্রিক একটি আইনও তৈরি করেনি, বরং গণতন্ত্রকে প্রসারিত করার জন্য গণমাধ্যম, টিভি চ্যানেল, কমিউনিটি রেডিও, এফএম রেডিও উন্মুক্ত করে দিয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিদেশি সাংবাদিকদের বলেছি, আপনারা আইন-কানুনগুলো দেখে আপনাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সভায় কানাডা, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, ইথিওপিয়া, ভারত, ব্রাজিল, ইস্তাম্বুল, থাইল্যান্ডের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।