মিয়ানমার থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য উখিয়ার কতুপালংয়ে ১শ শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছে রেডক্রস ইন্টারন্যাশনাল। যেখানে দেশি-বিদেশি ২২জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে সার্জারি থেকে শুরু করে সব ধরনের রোগের চিকিৎসা এবং ওষুধ দেয়া হবে। তাঁবুসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় আগামী বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে হাসপাতালটি।
মাত্র দু’দিনে পুরো চিত্রই যেন পাল্টে গেছে। রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়ার পর অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো কতুপালংয়ের এ রাবার বাগানটি। পুরো বাগান জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো রোহিঙ্গাদের ফেলে যাওয়া ময়লা আবর্জনা। কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রস কর্মীদের হাতের ছোঁয়ায় বাগানটি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের পর উঁচু-নিচু পাহাড়টিতে এখন বসানো হচ্ছে চিকিৎসা শাস্ত্রের অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি। রোগী রাখার তাঁবুও প্রস্তুত। এখানেই হচ্ছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ১শ শয্যার অত্যাধুনিক হাসপাতাল।
রেডক্রস ইন্টারন্যাশনাল টিম লিডার পিটার মাইয়ার বলেন, আমরা রেডক্রিসেন্ট বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছি। হাসপাতালটি বেশ হবে। ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে এর পরিধি।
গত ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। উখিয়া এবং টেকনাফে অবস্থান নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ডায়রিয়া-কলেরাসহ নানা রোগ। এ অবস্থায় এ হাসপাতালটি রোহিঙ্গাদের পর্যাপ্ত সেবা দিতে পারবে বলে আশা এ রেডক্রস কর্মকর্তার।
রেডক্রস ইন্টারন্যাশনাল টেকনিক্যাল হেড অ্যান্দ্রাস বলেন, এখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা খুব ভালো। এলাকাবাসীও আমাদের অনেক সাহায্য করছেন। সবার কল্যাণে আমরা আরও বেশি কাজ করব যাতে মানুষ উপকৃত হতে পারে।
রেডক্রস ইন্টারন্যাশনালের ৫০ জনের বেশি কর্মী দিন-রাত কাজ করে হাসপাতাল স্থাপনের কাজ অনেকটা এগিয়ে নিচ্ছেন। তবে স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা করছে রেড ক্রিসেন্ট।
মিয়ানমার শরণার্থী বিষয়ক রেড ক্রিসেন্ট টাস্কফোর্স প্রধান সমন্বয়কারী সেলিম আহমেদ বলেন, এখানে সকল ধরনের চিকিৎসক ও সহায়তা দেওয়া হবে এবং সকল কাজের সঙ্গে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি যুক্ত থাকবে।
হাসপাতালটিতে বিদেশি ৭জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশের ১৫ জন চিকিৎসক।