শিশুদের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তাদের খাবারে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন পড়ে। শিশুর মেধা বিকাশে খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে কিছু খাবার আছে, যা নিয়মিত গ্রহণের ফলে শিশুর মনোযোগ, স্মরণশক্তি এমনকি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বর্তমান ভেজালের যুগে সঠিক, ভেজালমুক্ত খাবার পাওয়া দুষ্কর। আর শিশুরা যা খাচ্ছে তা সরাসরি প্রভাব পড়ছে শিশুর মস্তিষ্কে। তাই শিশুর খাবারের উপর বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন। কিছু খাবার আছে যা শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করে। আপনার শিশুর মস্তিষ্কের উন্নতি সাধনের জন্য প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখুন এই খাবারগুলো।
১। টকদইঃ কিছু কিছু ফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য এমনকি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। টকদইয়ের প্রোটিন মস্তিষ্কের কোষের উন্নতি সাধন করে। শুধু তাই নয়, মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে টকদই। মিষ্টি খাবার অথবা ফলের সাথে টকদই মিশিয়ে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
২। ডিমঃ বেথ স্যালটেজ বলেন “ ডিমের প্রোটিন এবং পুষ্টি উপাদান শিশুর মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে”। ডিমে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, জিঙ্ক ইত্যাদি যা মস্তিষ্কে কোষ তৈরি করে। যত বেশি কোষ তৈরি হবে স্মৃতিশক্তি ততই বৃদ্ধি পায়।
৩। মাছঃ বাচ্চারা মাছ পছন্দ করে না। কিন্তু এই মাছকে সুপার ফুড বলা হয়। ওমেগা থ্রি এবং ভিটামিন ডি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং মেমরি লস হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে। সামুদ্রিক মাছ যেমন স্যামন, টুনা, সার্ডেন ইত্যাদি মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। বোনিয়া টুবা ডিক্স বলেন “যত বেশি ওমেগা থ্রি মস্তিষ্ক পাবে তত বেশি শিশুর মনযোগ বৃদ্ধি পাবে”।
৪। পানিঃ খাদ্য হিসেবে পানিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অথচ শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে তার প্রভাব সরাসরি মস্তিষ্কের উপর পড়ে থাকে। শিশুর স্মরণশক্তি বৃদ্ধিতেও পানি ভূমিকা রাখে। প্রতিবেলা খাবার গ্রহণের পর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করছে কিনা নজর রাখুন। পানি পান করতে না চাইলে পানির পরিবর্তে ফলের জুস পান করতে পারেন।
৫। ওটমিলঃ ফাইবার এবং প্রোটিনের প্রধান উৎস হলো ওটমিল। এটি মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্রের ধমনী পরিষ্কার রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশুরা নিয়মিত ওটমিল গ্রহণ করেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় বেশি তীক্ষ্ণ হয়। সকালের কিংবা বিকালের নাস্তায় শিশুকে ওটমিল দিতে পারেন।
৬। বাদামঃ প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ বাদাম মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সকালের নাস্তায় পিনাট বাটার রাখুন। অথবা প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম খাওয়ানোর অভ্যাস করুন।
৭। আপেল এবং আলু বোখরাঃ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আপেল মস্তিষ্কের কোষ সচল রাখে। শিশুদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে এই ফল দুটি বেশ কার্যকর। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা এই দুটি ফল রাখার চেষ্টা করুন।
৮। ব্রকলি এবং ফুলকপিঃ ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন কে রয়েছে যা ব্রেইনপাওয়ার বাড়ায়। কাঁচা সালাদ হিসেবে অথবা রান্না করে ব্রকলি শিশুকে খাওয়াতে পারেন। ব্রকলির মত আরেকটি সবজি হল ফুলকপি। ব্রকলির পরিবর্তে ফুলকপি খাওয়াতে পারেন।
৯। মিষ্টি কুমড়োর বীচিঃ মিষ্টি কুমড়োর বীচিতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক রয়েছে। জিঙ্ক স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা পালন করে। সালাদ কিংবা ফলের সাথে এক মুঠো মিষ্টি কুমড়োর বীচি ভেজে দিতে পারেন।
১০। দুধঃ প্রোটিন, ভিটামিন ডি, ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার দুধ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি, এটি আমরা সবাই জানি। দুধের ক্যালসিয়াম শরীরে এর্নাজি বৃদ্ধি করে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি করে।