শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচে পর্দা উঠছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির
প্রকাশ: ১২:৪৬ pm ০১-০৬-২০১৭ হালনাগাদ: ১২:৫১ pm ০১-০৬-২০১৭
 
 
 


ক্রিকেট ভক্তদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পর্দা উঠছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির। আজ উদ্বোধনী দিনে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে খেলছে ইংলিশরা। অন্যদিকে ‘ডার্ক হর্স’ তকমা নিয়ে এই টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

ঘরের মাঠ হওয়ায় ইংল্যান্ড কিছুটা এগিয়ে থাকবে ইংলিশরা। অবশ্য উল্টোটাও হতে পারে। স্বাগতিক হওয়ার কারণে পুরো চাপটা তাদের কাঁধেই চেপে বসতে পারে! সেই সুযোগটাই নিতে চাইবে বাংলাদেশ। এছাড়া বড় মঞ্চে ‘বড় বড়’ দলগুলোর বিপক্ষে জয় ছিনিয়ে আনার রেকর্ডও বাংলাদেশের।

বৃহস্পতিবার দুই দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তুত ২২ গজের মঞ্চ। সেই মঞ্চে রোমাঞ্চ ছড়ানোর পালা টাইগার ও থ্রি লায়নদের। ম্যাচটি লন্ডনের কেনিংসটন ওভালে বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হবে। সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভ, মাছরাঙা টিভি, গাজী টিভি ও স্টার স্পোর্টস।

গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকেই আমূল বদলে গেছে মাশরাফিরা। টাইগারদের পারফরম্যান্সের গ্রাফটা হয়েছে উর্ধ্বমুখী। সর্বশেষ আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে রানার্স-আপ হয়ে প্রথমবারের মতো ষষ্ঠ স্থান উঠে নিজেরে উন্নতি জানান দিয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকে।

আয়ারল্যান্ডে ভালো সময় কাটালেও ইংল্যান্ডে এসে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে হেরে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। যদিও প্রস্তুতি ম্যাচেই এই হারকে আমলে নিচ্ছে না মাশরাফি এবং তার দল।

গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকেই প্রেরণা নিচ্ছেন মাশরাফিরা! সেবার দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেও বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল মাশরাফির দল। অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে বিশ্বকাপ মঞ্চে ইংল্যান্ডের বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ।

এমন অতীত স্মৃতিতে রোমাঞ্চিত হয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও অসাধারণ কিছু করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি ঘিরে দুই শিবিরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বাংলাদেশকে সমীহ করলেও ইংলিশ ক্রিকেটারদের মনে মনে 'প্রতিশোধ' নেওয়ার লক্ষ্য নেই- এমনটা ভাবার কোনও সুযোগই নেই! ২০১১ বিশ্বকাপে ২ উইকেটে হেরেছিল ইংলিশরা। আর ২০১৫ সালের গত বিশ্বকাপে তো মাশরাফিদের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। টানা দুটি বিশ্বকাপে হারের বদলাটাতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে নেবে না তো ইংল্যান্ড? হয়তো প্রতিশোধের নেশাতে কিছুটা হলেও তেতে আছে মরগানরা। যদিও আইসিসি নকআউট বা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একবার মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। ২০০০ সালের দ্বিতীয় আসরে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের ওই ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছিল ইংল্যান্ড।

এদিকে চলতি সপ্তাহেই দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে ফুরফুরে মেজাজে ইংলিশরা। ওখানে প্রথম দুই ম্যাচেই তিনশোর বেশি রান করেছে ইংলিশরা। শেষ ম্যাচে প্রোটিয়া পেসার কাগিসো রাবাদা নৈপুণ্যে ১৫৬ রানে আটকে যায় ইংল্যান্ড।

বাংলাদেশের মুস্তাফিজ-রুবেল যদি রাবাদার মতো ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরতে পারে, সেক্ষেত্রে হয়তো ইংলিশদের রানের চাকা আটকে রাখা সম্ভব হবে। নয়তো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচের মতোই বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হবে জেসন রয়-মরগানরা।

এর পাশাপাশি নিজেদের চেনা কন্ডিশনের সুবিধা তো থাকছেই ইংল্যান্ডের সামনে। বুধবার ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক মরগান বলেছেন, ‘ভালো শুরুর জন্যই মাঠে নামব আমরা। দল হিসেবে শক্ত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। ম্যাচটি যে দল ভালো খেলবে তারাই জিতবে।’

এদিকে টাইগার অধিনায়ক দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের কথা ভুলে যেতে চান। মূল ম্যাচে তার সতীর্থরা সবকিছু ভুলে ভালো শুরু করতে পারবে বলে তার বিশ্বাস, ‘প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি জিততে পারলে হয়তো ভালো হতো। কিন্তু পারিনি বলে সব শেষ হয়ে যায়নি। আমরা শুরুটা ভালো করতে চাই। এছাড়া পরিকল্পনাগুলো ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে ম্যাচ জেতা সম্ভব হবে।’

বাংলাদেশকে ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ রাখতে গেলে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং তিন বিভাগেই জ্বলে উঠতে হবে। তাই ব্যাটিংয়ে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম এবং বোলিংয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ও অলরাউন্ড ক্যাটাগরিতে সাকিব আল হাসানের দিকে চেয়ে থাকবে বাংলাদেশ। এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা তামিমকেই প্রয়োজন আজকের ম্যাচে। সেই সঙ্গে সাকিব-সাব্বির সময়মতো জ্বলে ওঠাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কেনিংসটন ওভালের উইকেট মোটেই অপরিচিত নয় বাংলাদেশের জন্য। এই মাঠেই দুইদিন আগে ভারতের বিপক্ষে লজ্জাজনক স্কোর গড়েছিল মাশরাফিরা। এই মাঠের একটি বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে আকাশে মেঘ এবং বাতাস থাকলে পেসাররা সুইং পায়। যেমনটা পেয়েছিল ভারতীয় বোলাররা। 

তবে এই উইকেট ৩০০’র উপর রানের পাশাপাশি ১০০ রানের নিচে হওয়া সম্ভব! এমন অদ্ভুত উইকেটে খেলা ভারতের বিপক্ষের প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে টাইগার অধিনায়ক শিক্ষা নিতে চান মাশরাফিরা, ‘এখানকার উইকেটর এমন আচরণ সম্পর্কে আগে শুনেছি। এবার নিজ চোখেই দেখলাম। এই অভিজ্ঞতা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে লাগবে।’

শুধু প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লাগালে হবে না মাশরাফিদের। ইংলিশদের বিপক্ষে উপযুক্ত একটি একাদশ নির্বাচন করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটাই এখন টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট জন্য কঠিন কাজ হয়ে উঠেছে। আজ দুপুরে একাদশটা কেমন হয়; সেটাই এখন দেখার বিষয়!

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT