চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে ঘরের মাঠে অলৌকিক কিছু দেখানোর প্রয়োজন ছিল বার্সেলোনার। শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর বিপক্ষে তেমন অবিশ্বাস্য কিছুই করে দেখাল মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা।
শেষ ষোলোর প্রথম লেগে পিএসজির বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল বার্সেলোনা। তাই চ্যাম্পিয়নস লিগে টিকে থাকতেই ইতিহাস গড়তে হয় তাদের। ঘরের মাঠে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা এক সঙ্গে জ্বলে উঠায় গতকাল ৬-১ ব্যবধানে মহাকাব্যিক জয় পেয়েছে কাতালানরা। ফলে দু্ই লেগ মিলে ৬-৫ ব্যবধানে শেষ আটের টিকেট পেল লুইস এনরিকের দল।
প্রথম লেগে ৪ ও এর বেশি ব্যবধানে হারের পর ফিরতি লেগে ঘুরে দাঁড়ানোর রেকর্ড নেই চ্যাম্পিয়নস লিগে কোনো দলের। তবে দলটা বার্সেলোনা হওয়ায় এবার তাদের পক্ষে বাজি ধরার লোকের অভাব ছিল না।
ঘরের মাঠে গতকাল বার্সেলোনার গোল উৎসবের সূচনা করেন দলটির আক্রমনভাগে ত্রিফলার এক রত্ন লুইস সুয়ারেজ। ম্যাচের তিন মিনিটেই সুয়ারেজের হেড থেকে বল ঢুকে পড়ে পিএসজির গোল পোস্টে । বল মাটিতে পড়ার আগেই পিএসজি ডিফেন্ডার মুনিয়ে বল ফেরালেও গোল লাইন প্রযুক্তিতে দেখা যায় সেটা গোল। এরপর ম্যাচের ৪০ মিনিটে আত্মঘাতি গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। এসময় ডি-বক্সের ডান দিকে ব্যাক হিলে বল গোলপোস্টে পাঠানোর চেষ্টা করেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। কিন্তু সেটা পিএসজি ডিফেন্ডার লেইভিনের পায়ে লেগে নিজেদের গোল পোস্টেই ঢুকে পড়ে।
বিশ্রাম শেষে দ্বিতীয়ার্ধে মোট ৫টি গোল করে দুই দলের খেলোয়াড়রা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সফল স্পটকিকে বার্সাকে আরেকধাপ এগিয়ে দেন দলের সেরা তারকা মেসি। লেইভিন নিজেদের ডি-বক্সে নেইমারকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। আর সেটা কাজে লাগান আর্জেন্টাইন তারকা।
তবে ম্যাচের ৬২ মিনিটে ক্যাম্প ন্যুকে স্তব্ধ করে দেন কাভানি। ডি-বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে জোরালো শটে টের স্টেগেনকে পরাস্ত করেন উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকার। দুই লেগ মিলিয়ে পিএসজির স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৫-৩। অতিথিরা মূল্যবান অ্যাওয়ে গোল পেয়ে যাওয়ায় তখন বার্সার প্রয়োজন হয়ে পড়ে তিনটি গোল।
এরপর দুই দলের বেশ কিছু প্রচেষ্টার পর ম্যাচের ৮৮ মিনিটে দুর্দান্ত এক ফ্রি কিকে বার্সা শিবিরে উচ্ছ্বাস ফেরান নেইমার। টিকে থাকতে তখনও আরও দুই গোল প্রয়োজন ছিল তাদরে। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে পেনাল্টি থেকে দুর্দান্ত আরেক গোলে স্বাগতিকদের ব্যবধান ৫-১ করেন নেইমার। আর যোগ করা সময়ের শেষ মূহুর্তে নেইমারের কাছ থেকে উড়ে আসা বলে পা ছোঁয়ান সার্জিও রবার্তো। আর তার গোলেই ৬-১ ব্যবধান জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্লুগ্রেনারা।