শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টাইগারদের ৯০রানের বিশাল জয়।
জিততে হলে করতে হবে ৩২৫ রান। ডাম্বুলার রণগিরি ভেন্যুতে তিনশ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই কোন দলের। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিততে হলে নতুন রেকর্ড গড়তে হবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে। সেই অসাধ্য সাধন করতে শনিবার প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাট করতে নেমে ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বড় লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়েছে স্বাগতিক শিবির। প্রথম ওভারেই লঙ্কান শিবিরে আঘাত হেনেছেন বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
তৃতীয় বলেই লঙ্কান ওপেনার দানুষ্কা গুণাথিলাকাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন ম্যাশ। লঙ্কান দলীয় স্কোর তখন শূন্য। প্রথম ওভার মেডেনসহ এক উইকেট নেন মাশরাফি। যদিও রিভিউ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু কাজ হয়নি। তিন বলে শূন্য রানে বিদায় নেন গুণাথিলাকা।
লঙ্কান শিবিরে দ্বিতীয়বারের মতো হানা দেন ওয়ানডেতে অভিষেক হওয়া বা হাতি স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫.৬ ওভারে মিরাজের বলে শুভগতর হাতে ক্যাচ দেন ওয়ান ডাউনে নামা কুশল মেন্ডিজ। ১৭ বলে চার রান করে সাজঘরে ফেরেন মেন্ডিজ।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক উপল থারাঙ্গা ও দিনেশ চান্দিমাল। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। হামলে পড়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ১০.৬ ওভারে তাসকিনের বলে মাশরাফির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন থারাঙ্গা। তার আগে করে যান ২৯ বলে তিন চারে ১৯ রান।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে কিছুটা ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন চান্দিমাল ও গুণারত্নে। এই জুটি থেকে আসে ৫৬ রান। শেষ অবধি এই জুটি বিচ্ছিন্ন করে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি এনে দেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২৩.২ ওভারে সাকিবের বলে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দেন গুণারত্নে। ৪০ বলে দুই চারে ২৪ রান করে ফেরেন তিনি।
গলার কাঁটা হিসাবে ব্যাট করছিল দিনেশ চান্দিমাল। যিনি গোটা সিরিজেই কম বেশি ভুগিয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের। এই ম্যাচেও ফিফটি করে আগাচ্ছিলেন সাবলিল গতিতে। শেষ পর্যন্ত তাকে থামান অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজ।
২৮.৫ ওভারে মিরাজের বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সৌম্যর হাতে ধরা পড়েন চান্দিমাল। সাজঘরে ফেরার আগে চান্দিমাল করে যান ৭০ বলে ৬ চারে ৫৯ রান।
মুস্তাফিজ উইকেট পাচ্ছেন না। এমন আফসোস ছিল মাঠ ও মাঠের বাইরে। ৩৩.৩ ওভারে মিলিন্দা শ্রীবর্ধনেকে আউট করে ভক্তদের আশ্বস্ত করেন কাটার মাস্টার। মুস্তাফিজের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মিডউইকেটে শুভাগতর তালুবন্দী হন শ্রীবর্ধনে। ২৫ বলে এক চার ও এক ছয়ে ২২ রান করেন শ্রীবর্ধনে।
এরপর আবারো মাশরাফির আঘাত। ৩৭.১ ওভারে মাশরাফির বলে রিয়াদের হাতে ক্যাচ দেন পাথিরানা। ৩২ বলে তিন চারে ৩১ রান করে ফেরেন পাথিরানা। অষ্টম উইকেট জুটিতে লাকমলের সঙ্গে রানের গতি বাড়াচ্ছিলেন থিসারা পেরেরা।
এই জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। নয় বলে এক চারে ৮ রান করা সুরঙ্গ লাকমল মুস্তাফিজের বলে ক্যাচ দেন সাব্বিরের হাতে। শ্রীলঙ্কার অষ্টম উইকেটের পতন। দলীয় রান তখন ২০৮।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে রেকর্ড গড়া ইনিংস উপহার দেয় বাংলাদেশ। ৫ উইকেটে টাইগার শিবির করে ৩২৪ রান। যেখানে ১২৭ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন হার্ড হিটার তামিম ইকবাল। ফিফটি করেন সাব্বির ও সাকিব।
৩২৪ রান শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস বাংলাদেশের। আগেরটি ছিল ২৬৫ রান, মোহালিতে, ২০০৬ সালে।
ডাম্বুলার রণগিরি ভেন্যুতেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে কোন দলের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। প্রথম দুটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, ৩২৯, ৩২৬। ৩২৪ রানের ইনিংস শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সব দল মিলিয়ে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশ দল:
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।