‘প্রেম মানে না বয়স, মানে না কোনো দূরত্ব’। মার্কিন নারী শ্যারন খান একথাই প্রমাণ করলেন যেনো।
ঘটনার সূত্রপাত ৬ মাস আগে ফেসবুকে। বন্ধুত্ব থেকে প্রণয়। তারপর প্রেমের টানে সুদূর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন এই চল্লিশ বছর বয়সী মার্কিন নারী। বিয়ে করেছেন ফরিদপুরের ২৬ বছরের যুবক আশরাফউদ্দিন সিংকুকে।
তাদের এ প্রণয় শুধু ওই পরিবারেই নয়; পুরো গ্রামবাসীর কাছেই যেনো বিরাট চমক।
ফরিদপুরের সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের আলাউদ্দিন মাতুব্বরের জ্যেষ্ঠ পুত্র আশরাফ উদ্দিন সিংকু কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের মাষ্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। তার পিতা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গাড়িচালক। ঢাকায় থাকেন। তবে পরিবার থাকে শহরের হারুকান্দিতে নদী গবেষণা ইন্সটিটিউটের (নগই) স্টাফ কোয়ার্টারে।
আর মার্কিন মুসলিম নাগরিক সোলায়মান খানের বড় মেয়ে শ্যারন। জন্ম আমেরিকাতেই। পেশায় ব্যাংকার। থাকেন নিউইয়র্কে। সেখানে প্রথম শ্রেণির একটি ব্যাংকে চাকরি করেন। ছোট আরেক বোন রয়েছে তার।
সিংকু জানান, ৬ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের বন্ধুত্ব। ভার্চুয়াল জগতে আলাপচারিতার একপর্যায়ে শ্যারন বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। এপর্যায়ে গত ৬ এপ্রিল বাংলাদেশে আসেন শ্যারন। এরপর উভয়ের সম্মতিতে ১০ এপ্রিল ঢাকাতে তাদের বিয়ে হয়। দু’জনেই মুসলিম। তাই বিয়েতে পরিবারের বা ধর্মীয় বাধা ছিলো না।
সিংকু বলেন, ‘যদিও আমাদের বয়সের ব্যবধান রয়েছে তবু আমরা একে অপরকে পেয়ে দারুণ খুশি।’
‘বাংলাদেশে আসতে পেরে আমার কি যে ভালো লাগছে বোঝাতে পারবো না’, ভাঙা ভাঙা বাংলা ও ইংরেজি মিলিয়ে শ্যারন জানান তার প্রতিক্রিয়া। তিনি বলেন, ‘স্বামী ও শ্বশুরের পরিবার এবং এদেশের মানুষ ও পরিবেশ-প্রকৃতি সবকিছুই খুবই ভালো লেগেছে আমার। আমি সত্যিই বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে গেছি। এদেশের মানুষদের ভালবেসে ফেলেছি।’
আগামী ২১ এপ্রিল শ্যারনের ফিরতি ফ্লাইটে নিউইয়র্ক ফিরে যাবেন। তবে স্বামীর দেশে দ্রুতই আবার ফিরে আসবেন বলে জানান তিনি।
মফস্বলের ছেলে সিংকুর পরিবার মার্কিন এই নারীকে পুত্রবধূ হিসেবে পেয়ে আনন্দে উদ্বেলিত।
সিংকুর মা নার্গিস আক্তার বলেন, ‘এমন একজন পুত্রবধূ পেয়ে আমি এত্তো খুশি হয়েছি তা বলতে পারবো না। সে যখন আম্মু বলে ডাক দেয়, তখন আনন্দে দিশেহারা হয়ে যাই। প্রতিবেশীরাও উচ্ছ্বসিত। প্রতিদিনই কেউ না কেউ তাদের দেখতে আসছেন এবং দোয়া করে যাচ্ছেন।’
সিংকুর বাবা আলাউদ্দিন মাতুব্বর জানান, ‘আমার স্ত্রীর অসুখের কথা শুনে শ্যারন আমাদের কাছে ছুটে এসেছে। এতে আমরা অনেক খুশি হয়েছি। বাংলাদেশের সব কিছু দেখে প্রেমে পড়ে গেছে সে।’