জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহ ॥
দুইতলা বাড়ির চারিপাশ জুড়ে মৌচাক। প্রতি মুহুর্ত হাজার হাজার মাছির আনাগোনা। মৌমাছিগুলো আপন মনে মধু সংগ্রহ করে ফিরছে চাকে। বাড়ির মালিক বা প্রতিবেশিদের কাউকেই ক্ষতি করে না। গোটা বাড়ি জুড়েই মৌচাকের সমারাহো। এক বাড়িতেই বসেছে ২৫টি মধুর চাক। ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের কৃষক মনিরুদ্দীন কাজীর বাড়িতে এই মৌচাকের বসবাস। দুইতলা বিশিষ্ট বাড়ির উপর নিচের ছাদের কার্ণিশ জুড়ে সারিবদ্ধ ভাবে মৌচাকগুলো সাজানে। প্রথমে দেখলে মনে হবে কোন নিপুন হাতের কারুকার্য্য। কৃষক মনিরুদ্দীন কাজী জানান, তার বাড়িটি তৈরী করার পর থেকে একটি দুইটি করে মৌচাক বসতে থাকে। গত ৫ বছর ধরে ২২ থেকে ২৫টি মধুর চাকে মৌমাছিগুলো বসবাস করছে। বৈশাখ ও জৌষ্ঠের খরতাপে ফুল ও পানি সল্পতার কারণে ৮ থেকে ১০টি মৌচাক থাকে। আষাড় ও শ্রাবন মাস আসলে আবারো ২০ এর অধিক মৌচাকের সংখ্যা বেড়ে যায় বলে জানালেন মনিরুদ্দীন। মনিরুদ্দীনের স্ত্রী মোমেনা খাতুন জানান, নিচতালার ঘরের ঢুকার প্রথেও মৌমাছিরা বসতে চায়। কিন্তু বাচ্চাদের হুল ফোটাতে পারে এমন আশংকায় আমরা বসতে দিই না। তা নাহলে হয়তো গোটাবাড়িই মৌচাকে ভরে যেতো। বাড়ির গৃহবধু রেবেকা খাতুন জানান, তাদের বাড়ির এই মৌচাক দেখতে পথচারীরা ভীড় করে। এতে তার বেশ আনন্দিতও হন। মনিরুদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ জানান, মধুর চাক ভাঙ্গতে অনেক মধু ব্যবসায়ীরা আসেন। কিন্তু তারা দাম না নিয়ে চাক ভেঙ্গে মধুর অর্ধেক ভাগ দিয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা বন কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দীন মুকুল বলেন, সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা ও মৌমাছিদের জায়গা দিতে পারলে ব্যবসায়ীক ভাবে সফল হতেন কৃষক মনিরুদ্দীন। এ থেকে তিনি খাটি ও আসল মধুও বিক্রি করে লাভবান হতেন। তিনি আরো বলেন, উৎপাত না থাকায় হয়তো মৌমাছিরা নিরাপদ ভেবেই ওই বাড়িতে চাক বসিয়ে বংশ বিস্তার করছে।