অস্বস্তিকর, ভ্যাপসা গরমে এক পশলা বৃষ্টি এনে দেয় শান্তির পরশ। সেই পরশে জীবন হয়ে ওঠে আনন্দময়। অবিরল ধারার বৃষ্টিপাত কারও জন্য আর্শীবাদ, আবার কারও কাছে বিড়ম্বনা।
লন্ডনে এমন এক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশের জন্য বৃষ্টি এল আশীর্বাদ হয়ে। অস্ট্রেলিয়ার জন্য বৃষ্টি হয়ে উঠল বিড়ম্বনা। নিশ্চিত জয় পেতে যাওয়া ম্যাচে পয়েন্ট খোয়াল অস্ট্রেলিয়া। বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে স্টিভ স্মিথের দলকে।
হারলেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল খেলার আশা শেষ-এমন সমীকরণে সোমবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমে কোনো লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৮২ রানে অলআউট টাইগাররা। জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পায় অসিরা। এ সময়ে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান জমা করে তারা।
এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। এক ঘন্টার বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় পুরো ওভাল স্টেডিয়াম। বৃষ্টি থামার পর স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে খেলা শুরুর কথা জানিয়েছিলেন আম্পায়াররা। কিন্তু খেলা শুরুর কিছুক্ষণ আগেই আবারও লন্ডনের আকাশের মন খারাপ! শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। তাতেই ম্যাচ পণ্ড। ৪৮ মিনিট অপেক্ষা করার পর স্থানীয় সময় রাত ৯টা ১৮ মিনিটে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড।
বেসরিক বৃষ্টিতে অস্ট্রেলিয়া পয়েন্ট হারালেও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ে টিকে আছে। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারালে এবং ইংল্যান্ড শেষ দুই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে হারালে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে যাবে বাংলাদেশ। আপাতত ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রার্থণা করতে হবে টাইগারদের। এরপর নিউজিল্যান্ডকে হারাতে হবে।
বড় মঞ্চে এমন ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯২ বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে বাজে অবস্থায় থেকে পাকিস্তান ১ পয়েন্ট পেয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনাল খেলে ইমরান খানের দল। এরপর ফাইনালে ২২ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ট্রফি জিতে ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খানরা।
বাংলাদেশ এত বড় স্বপ্ন না দেখলেও সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখছে। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হার এড়ানোর জন্য বৃষ্টিকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। বৃষ্টি আর্শীবাদ হয়ে এসেছে বাংলাদেশ জন্য। জয় বৃষ্টির, জয় টাইগারদের।
বৃষ্টিস্নাত দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতায় আলো ছড়িয়েছেন তামিম ইকবাল। ৯৫ রানের অসাধারণ ইনিংস উপহার দিয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থেকে মিচেল স্টার্কের বলে আউট হন তামিম। তামিম বাদে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান মাত্র দুই ব্যাটসম্যান। সাকিব আল হাসান ২৯ ও মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ১৪ রান। বল হাতে বাংলাদেশের লোয়ার অর্ডার ধসিয়ে দেন মিচেল স্টার্ক। তামিমের উইকেটের পর মাশরাফি, রুবেল ও মিরাজকে সাজঘরে ফেরত পাঠান বাঁহাতি পেসার।
দিনটা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টিতে কপাল পুড়ল তাদের। উল্টো চিত্র বাংলাদেশ শিবিরে। ফসকে যাওয়া ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পেয়ে উল্লাসিত টিম বাংলাদেশ। তাই তো মাশরাফি ম্যাচ শেষে বললেন,‘আমরা লাকি, অস্ট্রেলিয়া আনলাকি।’