চট্টগ্রামে ২২ রানে ইংল্যান্ডের কাছে সেই হার এখনও পোড়ায় মুশফিকুর রহিমকে। সেই ম্যাচে না হারলে সিরিজও যে বাংলাদেশই জিতত! আর তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অর্জিত এবারের সুযোগটা আর ‘নষ্ট’ করতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক। দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এখন ১-০-তে এগিয়ে। চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটা নিদেনপক্ষে ড্র রাখতে পারলেই অজিদের বিপক্ষে সিরিজটা হবে বাংলাদেশের। একটা সাফল্য আরেকটি অর্জনের পথ তৈরি করে। এ সিরিজে শুধু অস্ট্রেলিয়াকে এক টেস্টে হারিয়ে বাংলাদেশ থেমে থাকতে রাজি নয়। স্বপ্নের পরিধি ছাড়িয়েছে এখন আরও নতুন দিগন্তে। সেই স্বপ্ন টেস্ট সিরিজ জয়ের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখছে-আজ থেকে এক দশক আগে যদি কেউ এ কথা বলত তাহলে নিশ্চিত তার দিকে একটা সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাত সবাই, ‘মস্তিষ্কে কোনো সমস্যা আছে নাকি?’ আর এখন সেই অস্ট্রেলিয়া চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ হার এড়ানো নিয়ে! বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশকে নিয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম তাই বলতে পারছেন-‘আমরা যে আর আগের জায়গায় নেই সেটা ওরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে। তারা বুঝেছে যে কোনো পরিস্থিতিতে ব্যাটে-বলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ক্রিকেটার আছে বাংলাদেশ দলে। সিরিজে ভালো একটা ম্যাচ গেছে আমাদের। তবে এখনই আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। এখন আমাদের সামনে সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা আছে, যা আমরা অর্জন করতে চাই। এমন সুযোগ সবসময় আসে না। এমন চাপে অস্ট্রেলিয়া দল সবসময় থাকে না।’ জয়ের জন্য আত্মবিশ্বাস। নিজের চেষ্টা। পুরো দলের চেষ্টা। তাড়না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করার স্পৃহা। জেদ। এবং অবশ্যই আগ্রাসী মনোভাব-এসব উপকরণকে মাঠের সাফল্যের জন্য আবশ্যিক মানছেন মুশফিক-সাকিব দুজনই। একটা দল তখনই সাফল্যের শিখরে পৌঁছায় যখন সেই অর্জনে ধারাবাহিকতা থাকে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন নিজেদের সেই অবস্থানে তুলে আনতে পেরেছে। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো দুই টেস্ট খেলুড়ে দেশকে বাংলাদেশ যে কায়দায় হারিয়েছে সেই ধারাবাহিকতাই জানান দিচ্ছে-টেস্টেও বাংলাদেশ বাকি সব প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো দল হয়ে উঠতে পেরেছে। মুশফিক সেই প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আমরা লড়াই করেছিলাম। একটা ম্যাচে জিতেছিলাম। সিরিজটা ড্র হয়েছিল। এখন অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারালাম। এ জয়গুলো আমাদের মতো দলকে আরও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এ জয়ের অভিজ্ঞতা সবসময় কাজে লাগে। হয়তো এমন ম্যাচ পরিস্থিতি আমরা আবার পড়লে সেটা আরও ভালোভাবে সামাল দিতে পারব। আমি মনে করি এটা অনেক বড় একটা বিবৃতি।’ বড় বিবৃতি। বড় স্বীকৃতি। টেস্ট ক্রিকেটে এমন কিছুর খোঁজেই তো ছিল বাংলাদেশ!