বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
শুরু হচ্ছে নতুনদের নিবন্ধন: ছড়িয়ে পড়া অনেক রোহিঙ্গা বাদ পড়ার আশঙ্কা
প্রকাশ: ১০:০৫ am ১১-০৯-২০১৭ হালনাগাদ: ১০:০৬ am ১১-০৯-২০১৭
 
 
 


নির্যাতন ও সহিংসতার মুখে মিয়ানমার থেকে সদ্য পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ ইতোমধ্যে কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সবাইকে একস্থানে রাখার জন্য কক্সবাজারের উখিয়ায় জমিও চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে যারা নানা স্থানে ছড়িয়ে গেছে তারা নিবন্ধন কার্যক্রম থেকে বাদ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কক্সবাজার সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের একস্থানে রাখা এবং নিবন্ধন করা অত্যন্ত জরুরি। এতে তাদের পরবর্তীতে ফেরত পাঠানো বা তৃতীয় কোনো দেশে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সহজ হবে। কিন্তু ইতোমধ্যে যেসব রোহিঙ্গা উখিয়া-টেকনাফের বাইরে কক্সবাজার শহরসহ ছড়িয়ে গেছে তাদের বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কোনো রোহিঙ্গা যাতে নিবন্ধন থেকে বাদ না পড়ে সেটি নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বহু রোহিঙ্গা শহরের নুনিয়ারছড়া, সমিতি পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের একটি অংশ ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমে পড়েছে। পালের দোকান, লালদীঘির পাড়সহ কিছু স্থানে তাদের প্রকাশ্যে ভিক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। শহরে আগে কখনও ওভাবে রোহিঙ্গাদের ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখা যায়নি। মিয়ানমারের মংডুর খুইন্যাপাড়া এলাকার বাসিন্দা ৮৪ বছরের বৃদ্ধ মোহাম্মদ শরীফ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপাড়ায়। ওই বাড়িতে ৪০ জনের একটি দল আশ্রয় নিয়েছে। তারা সবাই কয়েক দিন আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে। পরে গাড়ি নিয়ে চলে আসে কক্সবাজার শহরে। আশ্রয় নেওয়া সবাই মোহাম্মদ শরীফের পরিচিত। কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর জিয়ানগর এলাকায় হাবিবুর রহমান, বোরহান, আবদুর রব, আবু জমিরসহ ১১টি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গা। প্রায় একই অবস্থা শহরের সমিতিপাড়া, লাইট হাউস এলাকা, কলাতলীর আদর্শগ্রাম এলাকায়। পাহাড়তলীর জিয়ানগরে পাহাড় কেটে বাড়ি তৈরি করেছেন মিয়ানমারের নাগরিক দিল মোহাম্মদ। কয়েক বছর আগে তিনি বাংলাদেশে আসেন। তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে ২০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু। তাদের একজন মো. হোছন (৫৫)। তার বাড়ি মংডুর ধাওনখালী গ্রামে। তিনি বলেন, গত ২৮ আগস্ট হঠাত্ করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। তারা তার ভাইপো ওসমান গণি ও ওমর ফারুককে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় অন্যরা দ্রুত ছুটে পালিয়েছে। এক সপ্তাহ আগে তারা শাহপরী দ্বীপ হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। লেদা ক্যাম্পে একদিন অবস্থানের পর চলে আসে দিল মোহাম্মদের বাড়িতে। সম্পর্কে দিল মোহাম্মদ তার স্ত্রীর বোনের স্বামী। শহরের সমিতিপাড়ায় অনেক রোহিঙ্গা ঢুকে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার কামাল। তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে প্রচুর রোহিঙ্গা সমিতি পাড়ায় ঢুকে পড়েছে। তারা তাদের পূর্বপরিচিত এবং নিকট আত্মীয়স্বজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে মসজিদে এবং এলাকায় মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি কেউ যেন রোহিঙ্গাদের বাসা ভাড়া না দেয়। ‘রোহিঙ্গা সেল’-এর মুখপাত্র ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খালেদ মাহমুদ বলেন, নিবন্ধন কার্যক্রমে নতুন অনুপ্রবেশ করাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও ছবি তোলার পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তাদের আঙুলের ছাপও সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কাজ বাস্তবায়ন করবে পাসপোর্ট অধিদফতর। ১৭ স্থানে এ নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। প্রাথমিকভাবে আজ সোমবার থেকে বালুখালীতে এ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হতে পারে।     তিনি বলেন, আমরা অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের একস্থানে নিয়ে আসার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করছি। ইতোমধ্যে উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আশ্রয়ের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে তাদের আশ্রয় দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে অন্যত্র ছড়িয়ে যেতে না পারে তার জন্য চারটি স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আজ আরও একটি চেকপোস্ট বসানো হবে।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT