বরিশালের বাবুগঞ্জের অসহায় মোছা.মনোয়ারা বেগমের(৭০) চিকিৎসার দায়িত্ব নিল পুলিশ। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বরিশাল রেঞ্জের উপ-মহাপরিচালক মো.শফিকুল ইসলাম হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়ে তিনি এ দায়িত্ব নেয়ার কথা বলেন। চিকিৎসার জন্য ১৫ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেন। তিনি জানান, তার অনুমতি ও তদন্ত সাপেক্ষ তার সন্তানদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান। বরিশালের বাবুগঞ্জের মোছা.মনোয়ারা বেগম(৭০) ভিক্ষার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
এ খবর গতকাল অনলাইনসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। এরপর প্রশাসনের নজরে আসে। তার ৬ সন্তান কেউই খোঁজ খবর রাখছেন না। ভিক্ষা করার শক্তিও তার ক্ষয় হয়ে গেছে। এখন বিছানায় পড়ে আছে। মোছা.মনোয়ারা বেগমের স্বামী বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের ক্ষুদ্রকাঠী গ্রামের মৃত আয়ুব আলী। কয়েক বছর আগে আয়ুব আলী মারা যান। এরপরই তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। মনোয়ারায়ার ৬ সন্তান। ৫ ছেলের মধ্যে ৩ জন পুলিশে চাকরি করেন। একমাত্র মেয়ে সেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। অথচ তাদের গর্ভধারিনী মা দু-মুঠো খাবারের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতছেন।
জানা গেছে, মৃত আয়ুব আলী সরদার সাধারণ কৃষক পরিবারের সন্তান ছিলেন। অভাব অনটনের সংসার হলেও ৬ সন্তান নিয়ে সুখেই দিন কাটছিলো আয়ুব আলী ও মনোয়ারা। ৬ সন্তানকে সাধ্যমত শিক্ষিত করে করেছেন। ২০০৪ সালের ১ অক্টোবর আয়ুব আলী সরদার মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম বয়সের ভারে স্বাভাবিক অবস্থায় হাঁটতেও পারছেন না। একটি ঝুপড়ি ঘরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
এক ছেলে ইজি বাইক চালক গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমি সামান্য আয়ের মানুষ। কোনো রকমে বেঁচে আছি । তারপরও আমার সাধ্যমতো মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টা করছি। কিন্তু মায়ের দরকার ভালো মানের চিকিৎসা। আমার তিন ভাই পুলিশ অফিসার। তারা তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যত্র থাকেন। কিন্তু মায়ের কোনো খোঁজ খবর রাখেন না।
তবে বড় ছেলে পুলিশের এস আই ফারুখ হোসেন বলেন, আমার মাকে আমরা অনেক বার চিকিৎসা করিয়েছি। তার কাগজ পত্র আমার কাছে আছে। বর্তমানে মা বেশি অসুস্থ। তাকে উন্নতমানের চিকিৎসা দেওয়া দরকার। কিন্তু আমরা দুই ভাই মিলে মা’কে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনতে চাইলে গিয়াস উদ্দিন বাধা দেয় এবং আমাদের ফিরে আসতে বাধ্য করে।