শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Smoking
 
রৌমারীতে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ২ শিশু হত্যা
প্রকাশ: ১১:৫৫ pm ০৫-১০-২০১৭ হালনাগাদ: ১১:৫৮ pm ০৫-১০-২০১৭
 
 
 


কুড়িগ্রামের রৌমারীতে প্রবাসীর স্ত্রীকে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে ২টি দুধের শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার ৪ দিন পর আড়াই বছরের আয়েশা সিদ্দিকার লাশ বৃহস্পতবিার (০৫ অক্টোম্বর) সকালে পুলিশ খেওয়ারচর এলাকার জিঞ্জিরাম নদী থেকে উদ্ধার করলেও ৭ মাস বয়সী হাসিবুল হাসানের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।

অভিযোগ রয়েছে, মাতাব্বররা এক সালিশ বৈঠকের পর পরকীয়া প্রেমিক ফরহাদ হোসেনকে বেদম মারপিট করে। সেই সাথে ওই শিশু দুটিকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে উপজেলার পাঠাধোয়াপাড়া এলাকার জিঞ্জিরাম নদীতে ফেলে হত্যা করে।

এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রবাসী আব্দুর রহমানের স্ত্রী শিরিন আক্তার, পরকীয়া প্রেমিক ফরহাদ হোসেনের পিতা হাশেম আলী ও মাতাব্বর ওমেদ আলীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।

গ্রামবাসীরা জানায়, ৯ বছর আগে রৌমারী উপজেলার পাঠাধোয়াপাড়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে আব্দুর রহমানের সাথে রাজিবপুর উপজেলার শিবেরডাঙ্গি গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে শিরিন আক্তারের বিয়ে হয়। সাংসারিক নানা অভাব-অনটনের কারণে গত দেড় বছর আগে আব্দুর রহমান রোজগারের জন্য ওমানে চলে যায়। বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকায় বাজার খরচ ও অন্যান্য প্রয়োজনে তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতো আব্দুর রহমানের মামাতো ভাই ফরহাদ হোসেন। তবে ওই গ্রামের মাতাব্বররাসহ কিছু মানুষ ফরহাদের ওই বাড়িতে যাতায়াত পছন্দ করতো না। তারা ভাবতো আব্দুর রহমানের স্ত্রী শিরিনের সাথে ফরহাদের পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে। ফলে ওই গ্রামের কিছু ছেলেপুলে ফরহাদকে ধরার জন্য রাত জেগে পাহারা দিতো।

শিশুদুটির মা শিরিন আক্তার জানান, ঘটনার দিন গত ২ অক্টোবর রাতে ফরহাদকে ওই এলাকায় দেখে চোর চোর বলে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তাকে ধরে বেদম প্রহার করে এবং ওই গ্রামের মাতাব্বর আশরাফ আলীর বাড়িতে এক সালিশ বৈঠকের ব্যবস্থা করে। সালিশে ফরহাদকে আবারও মারপিট করা হয়। পরে আমার কোল থেকে আমার বাচ্চা দুটিকে ছিনিয়ে নেয় একজন মাতাব্বর। তার আগে আমার দু'চোখ কাপড় দিয়ে বাধা হয়। ফলে কে বাচ্চা দুটিকে ছিনিয়ে নিয়েছে তা আমি জানি না। পরে ওই রাতেই আমাকে নদীতে ফেলে দেয় তারা। আমি নদীতে ভাসতে ভাসতে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দুরে দুবলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল লতিফ মাস্টারের বাড়িতে উঠি।

দুবলাবাড়ি গ্রামের আব্দুল লতিফ মাস্টার জানান, রাত আনুমানিক ১২টার দিকে একটা মেয়ে ভেজা কাপড়ে হঠাৎ আমার বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে। আমরা তাকে ঘরে নিয়ে নানা জিজ্ঞাসাবাদ করলে উপরোল্লিখিত কথাগুলো বলে সে। পরদিন আমি তাকে ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলীর নিকট পৌছে দেই।

বিষয়টি নিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (রৌমারী সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেওয়ারচর এলাকার জিঞ্জিরাম নদী থেকে শিশু আয়শা সিদ্দিকার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি এটি একটি হত্যাকাণ্ড। শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে কিংবা শিশুদুটির মাকে শিশু হত্যা করতে প্ররোচিত করা হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত হলফ করে কোন কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।

 
 

আরও খবর

Daraz
 
 
 
 
 
 
©ambalanews24.com | Developed & Maintenance by AmbalaIT