চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার জন সাধারণ ব্যাপক ভোগান্তি ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার পূর্ব অঞ্চলের প্রায় ২০ টি গ্রামের মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে কতিপয় চাঁদাবাজের নিকট। গ্রামগুলো হল যুগনি, বাঘিনি, খালিয়া, খড়িচাল, চর-বাঘিনী, রতনপুর, আবাইপুর, মিনগ্রাম, হাটশ্রীখোল, গাংগুটিয়া, কুমিড়াদহ, হাট ফাজিলপুর, কামান্না, বারইহুদা, বড়বাড়ি বগুড়া, আলফা পুর, কৃপাল পুর, পদ্মনগর, পাঁচপাখিয়া, রুপদাহ উল্লেখযোগ্য। এই গ্রাম গুলির জন সাধারন হাট গোপাল পুর হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ঝিনাইদহ মাগুরা শহর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত যাতায়াত করে। কিšুÍ তাদের সুবিধা মত পরিবহনে তারা যাতায়াত করতে পারে না। এই অবাধ যাতায়াতের পথে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে হাট গোপালপুরের কতিপয় চাঁদাবাজ। এলাকার ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাট-গোপালপুর থেকে ভ্যানে কোন যাত্রী ঐ গ্রাম গুলিতে যেতে পারবে না। ঐ অঞ্চলের ভ্যান গুলো শুধু যাত্রী নিয়ে আসতে পারবে। বাজার থেকে ভ্যানে যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে শুধু যারা কোদালিয়া, হরিসংকর পুর ও শ্রীরাম পুর গ্রামে। ঐ ২০ গ্রামের কোন ইজিবাইক হাট গোপাল পুর থেকে যাত্রী নিয়ে যেতে পারবে না তারা শুধু যাত্রীদের হাটগোপাল পুরে নিয়ে আসতে পারবে। এই কারনে আবাইপুর থেকে কোন যাত্রী হাট গোপাল পুরের ভ্যান বা ইজিবাইক নিয়ে আসতে পারবে না। যদি কেউ এই নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে এই সেন্টিগেট তাঁর ভ্যান অথবা ইজি বাইক হাট গোপালপুর টু আবাইপুরের রাস্তায় চালাতে পারবে না। প্রতিদিন এই সেন্টিগেটের ২ জন লোক বসে থাকে তারা প্রতি টিপে প্রতিটি ইজিবাইকের চালকের নিকট থেকে ২৫ টাকা করে আদায় করে। তাতে প্রতিদিন প্রায় ইজিবাইক বাবাদ ১১৫০ টাকা যাহা মাসে ৩৪৫০০ টাকা আদায় করে থাকে। এখানকার ইজিবাইক বাদে যদি বাহির থেকে কেউ কোন ইজিবাইক রিজার্ভ করে এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যায় তাহলে এই রাস্তায় আসার কারনে সেই গাড়ি থেকে ২০ টাকা আদায় করে। আলমসাধু, নছিমন, সহ অন্য গাড়ি থেকে ১০ টাকা আদায় করে। এদিকে, পুলিশের নামেও এখানে চাঁদাবাজি হয়ে থেকে বলে দালালরাও অভিযোগ করেছে। প্রতিমাসে পুলিশের দেওয়ার জন্য প্রতিটি ইজিবাইক থেকে ১২০ টাকা করে দেওয়া হয়। তাও এই মাসে আরও ১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। চলতি মাসে গাড়ি প্রতি পুলিশ কে দিতে হবে ১৩০ টাকা। এই কারনে যাত্রীদের করা হয় অযথা হয়রানি ও অরিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহন।
যেখানে ঝিনাইদহ শহর থেকে সিএনজি অথবা ইজিবাইকে হাট গোপালপুর পর্যন্ত ১৪ কিমি ২০ টাকা ভাড়া নেয়। সেখানে হাট গোপালপুর টু আবাইপুর ১২ কিমি ২৫ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকে। ইজিবাইকে যেখানে ৬ জন যাত্রী নেওয়া যায় সেখানে অতিরিক্ত চাপাচাপি করে ৮ জন যাত্রী নিয়ে যায়। এজন্যে অনেক যাত্রী অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তারপর ঝিনাইদহ অথবা মাগুরা থেকে গাড়িতে নামতে হয় মহাসড়কে যাত্রীদের নিকট ভারি ব্যাগ থাকলে সেটা বহন করে আবাইপুর যাওয়ার স্ট্যান্ডে আসতে অনেক কষ্ট হয়। যাত্রীরা পড়েছে উভয় সংকটে অতিরিক্ত ভাড়াও দিচ্ছে আবার কষ্ট করছে। গাড়িতে অনেক সময় ৮ জন যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়। ইচ্ছা করলেও যেতে পারছে না অন্য ভ্যান কিম্বা ইজিবাইকে। ২০ গ্রামের মানুষ এই সেন্টিগেটের নিকট বড়ই অসহায় হয়ে পড়েছে। শুধু জনসাধারণ নয় এই সেন্টিগেটের বিপক্ষে খোদ ইজিবাইক চালকেরাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইজিবাইক চালক বালেন, আমারা প্রশাসনের অনেকের নিকট অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এছাড়া জানা গেছে, ঝিনাইদহ শহরের ৭১,র ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অফিসের সামনে থেকে প্রায় ১২০ টি সিএনজি হাট গোপালপুরের যাত্রী আনা নেওয়া করে। প্রতিদিন একটি সিএনজি র চালক কে ঝিনাইদহে ৩০ টাকা গোয়ালপাড়া বাজারের ২০ টাকা ও হাট গোপাল পুরে ২০ টাকা করে মোট ৭০ টাকা চাঁদা দিয়ে পথে চলতে হয় জৈনিক ইজিবাইক চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাট গোপালপুরের এই রাস্তায় প্রায় ২৩ টি ইজিবাইক আছে। ইজিবাইক প্রতি ২ বার যাত্রী নিয়ে যেতে পারে। পুলিশের চাঁদা, স্ট্যান্ডের চাঁদা আবার যাওয়ার সময় যাত্রী নিয়ে গেলেও তাদের আসতে হয় খালি গাড়ি নিয়ে। যদি ২ দিক থেকে যদি তারা যাত্রী নেয়া যেত তাহলে তাদের খরচ কম হত এবং যাত্রীদের নিকট থেকে ভাড়া কম নিতে পারত। পাইক পাড়া গ্রামের জৈনিক চালক বলেন, রাস্তা সরকারের টাকা যদি দিতে হয় তাহলে সরকার কে দেব অরা কি সরকার? আমাদের নিকট থেকে টাকা নেই। মাননীয় জেলা প্রশাসকে বিষয় টা দেখা উচিত। এ প্রসঙ্গে হাট গোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই তরিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ ইজিবাইক চালকদের নিকট থেকে কোন অর্থ গ্রহণ করে না। পুলিশের মাসে ১২০ টাকা করে দিতে হয় কথাটি সম্পূর্ণ ভাবে মিথ্যা বলে তিনি দাবী করে। কারা নেয় বলে তাদের খোঁজ করবেন বলে তিনি জানান।